শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

 শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক। যা লিখে বা বলে শেষ করা যাবে না। তবে আমাদের সঠিক পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অবগত হতে হবে। সাধারণত অন্যান্য ঋতু তুলনায় শীতকাল ঋতুতে আমাদেরকে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।

শীতকালীন-সবজির-পুষ্টিগুণ-ও-উপকারিতা

আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবেন সবুজ শাকসবজি খাওয়ার উপকারিতা ও শীতকালীন সবজির তালিকা। আরও জানতে পারবেন শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। সেজন্য অবশ্যই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

পেজ সূচীপত্রঃ শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ

আমরা সাধারণত সকলেই জানি শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত। সাধারণত অন্যান্য ঋতু তুলনায় শীতকালে প্রচুর পরিমাণে সবজি পাওয়া যায়। যেগুলো পুষ্টিতে ভরপুর রয়েছে। শীতকালে সবজির স্বাদ দ্বিগুণ পরিমাণে বেড়ে যায়। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে শীতকালীন সবজির পুষ্টি গুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

সাধারণত আমাদের দেশে সব সময় কম বেশি শাকসবজি চাষ করা হয়ে থাকে। তবে শীতকালে তুলনামূলকভাবে একটু অতিরিক্ত সবজি চাষ হয়। আর এ সময় যে সকল সবজি চাষ করা হয় এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান থাকে। ভিটামিন ও মিনারেল আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

যার কারণে শীতকালে মানুষ তুলনামূলকভাবে সবজির পরিমাণ বেশি খেয়ে থাকেন। তবে অবশ্যই আপনাকে প্রতিটি ফল বা সবজি খাওয়ার আগে এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। কেননা আপনি যদি না জানেন কোন সবজি কিভাবে খেলে সঠিক পুষ্টি পাওয়া যায় তাহলে আপনার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনঃ ঘরোয়া ভাবে পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত

আমরা সাধারণত সবজিকে অতিরিক্ত পরিমাণে সিদ্ধ করে খেয়ে থাকি যার কারণে আমাদের দেহে মা রাত্মক ক্যান্সার রোহিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু আমরা সকলে না বুঝার কারণে আধা সিদ্ধ সবজি খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই সবজিকে তেলে সবজির পরিমাণ বেশি খেয়ে থাকেন। তবে অবশ্যই আপনাকে প্রতিটি ফল বা সবজি খাওয়ার আগে এ ভেজে মচমচে করে খেয়ে থাকি। এগুলো সাধারণত আমাদের দেহে পুষ্টির বদলে ক্ষতি করে।

সেজন্য শরীরে সঠিক পুষ্টি পাওয়ার জন্য সর্বদা চেষ্টা করবেন সেদ্ধ সবজি তেল মশলা ছাড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে আপনি আপনার শরীরে সরবরাহ করতে পারবেন। যেহেতু শীতকালে প্রচুর পরিমাণে সবজি পাওয়া যায় তাই আপনি যথেষ্ট পরিমাণে লবণ ও সামান্য হলুদ দিয়ে সিদ্ধ করে নিয়মিত সবজি খেতে পারেন। এতে করে অত্যাধিক পরিমাণে পুষ্টি পাবেন।

শীতকালীন সবজি চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশী শীতকালীন সবজি চাষ পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেননা এ সময় যাবতীয় সবজি চাষ করা হয় যেগুলোতে অত্যাধিক পরিমাণে পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। তার পাশাপাশি শীতকালীন সবজির চাহিদা বেশি থাকে। সে কারণে মানুষ অন্যান্য ঋতু তুলনায় শীতকালীন সময়ে সবজি চাষে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

তাছাড়া আমাদের দেশের কৃষকেরা এ সময় সবজি চাষ করে অধিক পরিমাণে লাভবান হয়ে থাকেন। এই সময় যেমন অতিরিক্ত সবজি চাষ করা হয়। শীতকালীন সবজি চাষ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে নভেম্বর মাস থেকে মার্চ মাসের মধ্যে উপযুক্ত সময় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। সাধারণত এই সময় আবহাওয়ার ঠান্ডা ভাব থাকে ও তুলনামূলকভাবে বৃষ্টি ও কম হয়।

আরও পড়ুনঃ বাচ্চাদের জন্য ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ 

যার কারণে কৃষকেরায় এ সময় সবজি চাষ করার উপযুক্ত সময় হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তবে অবশ্যই আপনাকে শীতকালে সবজি চাষ করার জন্য উপযুক্ত জমি নির্বাচন করতে হবে। যদি জমিটা ওর্বলতা বৃদ্ধি না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি সত্যি চাষ করে লাভবান হওয়ার থেকে পিছিয়ে পড়বেন। যার কারণে শীতকালে চাষ করার আগে আপনাকে সর্বপ্রথম জমি নির্বাচন করতে হবে।

জমি নির্বাচন করার পর গোবর সার পরিমাণ মতো জমিতে প্রয়োগ করে সবজি চাষ করতে হবে। এতে করে খুব তাড়াতাড়ি সবজির ফলন ভালো পাওয়া যায়। অন্যদিকে যে ধরনের সবজি চাষ করবেন তার বীজ অবশ্যই উন্নত মানের হতে হবে। কেননা বীজ না ভালো হলে ফসল ভালো হবে না। নির্বাচন করার পরে সেগুলো নিয়ে এসে নির্দিষ্ট সময়ে অর্পণ করতে হবে।

সেক্ষেত্রে আপনি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বীর বপন করতে পারেন। তবে বহন করার আগে আপনাকে মই দিয়ে জমিটি সমান করে নিতে হবে। তবে শীতকালে আপনি সবজি চাষ করলে এতে তুলনামূলকভাবে সার প্রয়োগ করতে হয়। বীজ লাগানোর আগে অবশ্যই অবসর ইউরিয়া প্রয়োগ করে বীজ লাগাতে হয়।

শীতকালে যে সকল সবজি চাষ করা হয়

সাধারণত শীতকালে কম বেশি সব ধরনের সবজি চাষ করা হয়ে থাকে। শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ উপকারিতা অনেক। যার কারণে এই সময় তুলনামূলকভাবে অতিরিক্ত পরিমাণে সবজি পাওয়া যায় এবং দাম সাশ্রয়ী থাকে। অন্যান্য ঋতুতে যেমন বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যায় ঠিক শীতকালীন সময় ও নির্দিষ্ট পরিমাণ ভালো বলে মনে করা হয় শীতকালে।

আরও পড়ুনঃ শীতে ত্বকের যত্ন নেয়ার সবচেয়ে কার্যকর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানুন

শীতকালীন সবজিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদানে ভরপুর থাকার কারণে গবেষকেরা গবেষণা করে দেখেছেন যে শীতকালীন সবজি অতিরিক্ত পরিমাণে সিদ্ধ না করে আদা সিদ্ধভাবে খেলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি পাওয়া যায়। এ সময় সবজি অতিরিক্ত পরিমাণে তেলে ভেজে বা মসলা দিয়ে কখনো খাওয়া উচিত না। এতে করে পুষ্টির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক যে সকল সবজি চাষ শীতকালীন সময়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • সিম
  • বাঁধাকপি
  • ফুলকপি
  • টমেটো
  • গাজর
  • মুলা
  • লাউ
  • ধুমা
  • মটর শুঁটির
  • মিষ্টি কুমড়া
এসকল সবজি তুলনামূলকভাবে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বাঁধাকপি ও ফুলকপি শীতকালীন সবজির হিসাবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে কম বেশি এখন সারা বছরই সবজি দেখতে পাওয়া যায়। তবে তুলনামূলকভাবে শীতকালে এসব সবজির স্বাদ ভালো লাগে।

যে সকল শাক শীতকালে পাওয়া যায়

শীতকাল এমন একটি ঋতু যে এ সময় যে কোন ফল ও শাকসবজি অতিরিক্ত পরিমাণে স্বাদে ভরপুর থাকে। সেজন্য আমাদের সকলকে শীতকালে সবজির পুষ্টিকুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। যে কোন জিনিস খাওয়ার আগে যদি সে সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা থাকে তাহলে সহজে পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা পাওয়া যায়।

আমরা সাধারণত অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শীতকালে প্রচুর পরিমাণে সবজি পেয়ে থাকি হাতের নাগালে। সাধারণত যে সকল সবজিগুলো শীতকালে পাওয়া যায় তার মধ্যে শাক এর পরিমাণ বেশি দেখা যায়। এ সময় নতুন নতুন শাগের আমদানি হয় বাজারে। সাধারণত শীতকালের সময়ে বাজারে যেসব দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে।

যে-সকল-শাক-শীতকালে-পাওয়া

বাঁধাকপি, ওলকপি, লাল শাক, পালং শাক, ঢেঁকি শাক, মুলা শাক, পিয়াজ পাতা, লাউ শাক, মটরশুটি শাক, খেসারি শাক, বুটের শাক, ধনিয়া পাতা ইত্যাদি ধরনের শাক পাওয়া যায়। যেগুলো আমরা খুব সহজে সংরক্ষণ করে খেতে পারি। তবে আমরা অনেকেই এর সঠিক পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানি না। না জানার কারণে আমরা এই সাত গুলার মূল্য দিতে পারি না।
এ ধরনের শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। যেগুলো আমাদের দেহে সাহায্য করে থাকে। উপরোক্তা সাগ গুলোর মধ্যে রয়েছে আইরন, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, এন্ড টি অক্সিডেন্ট, ও আস জাতীয় উপাদান। যেগুলো আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা প্রদান করে থাকে।

শীতকালীন সবজির উপকারিতা

সাধারণত আমরা সকলেই জানি শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ উপকারিতা অনেক। যার কারণে আমাদের সকলের উচিত শীতকালীন সময়ে লবণ ও হলুদ দিয়ে সিদ্ধ করে সবজি খায়া। এতে করে আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি সহজেই পূরণ হবে। তবে পারো চেষ্টা করবেন অতিরিক্ত মসলা ও তৈরি ছাড়া সিদ্ধ সবজি খেতে।

শীতকালীন সবজির উপকারিতা রয়েছে তার নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

1. গাজর

গাজর একটি শীতকালীন সবজি। যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। সাধারণত গাজর আপনি ইচ্ছে করলে কাচা ও খেতে পারেন এবং রান্না করে খেতে পারেন।, গাজোলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, বি টু, বি ৩, বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন কে রয়েছে।
 
যেগুলো আপনার দেহে প্রাকৃতিকভাবে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত গাজর খান তাহলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। কারণ গাজরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শীতকালের মৌসুমে খেলে আপনি উপকৃত হবেন। গাজল আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন সালাত, সবজি ও হালুয়া তৈরি করে।

2. পালং শাক

শীতকালীন শাগের মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ শাগ হচ্ছে পালংশাদ। পালং শাকে অত্যাধিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে শীতকালীন সময়ে প্রচুর পরিমাণে এই সাতটি খাওয়া হয়ে থাকে। আপনি যদি শীতকালীন সময়ে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তবে সেক্ষেত্রে নিয়মিত খেতে পারেন। পালং শাকের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে।

ভিটামিনের মধ্যে, এ বি,, সি,, কে, ই এবং তার পাশাপাশি যে ম্যাগনেসিয়াম ও আইরন থাকে। যা আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ সারাতে সহযোগিতা করে। হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য নিয়মিত পালং শাক খাওয়া ভালো। পালং শাক আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন যেমন-সুখ, সাগ রান্না করে ও ডালের সাথে রান্না করে খাওয়া যায়।

3. মুলা

শীতকালীন সবজির মধ্যে মোলা একটি আমাদের দেশের খুব জনপ্রিয় সবজি হিসাবে গুরুত্ব পেয়ে থাকে। তবে সকলে মোলা খেতে অভ্যস্ত নয় বা পছন্দ করেন না। কিন্তু তারা জানে না মূলত কি ধরনের গুনাগুন রয়েছে। না জানার কারণে তারা এত সুন্দর পুষ্টিতে ভরপুর একটি সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। সাদা মোলাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।

 যেগুলো আমাদের শরীরে নানা ধরনের কাজে সহযোগিতা করে থাকে। মূলাতে সাধারণত ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ডাইবেটিস রোগীদের জন্য এটি খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া মূলা এমন একটি পুষ্টি উপাদান যা ফ্লুই এর মত রোগের সাথে লড়াই করতে সক্ষম হয়। সাধারণত মুলা কাঁচা বা রান্না করে সবজি হিসাবে খেতে পারেন।

4. ফুলকপি

শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপিও বাঁধাকপি খুবই জনপ্রিয় সবজি হিসেবে ভূমিকা পালন করে। তুলনামূলকভাবে ফুলকপি শীতকালে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও শীতকালে ফুলকপি খেতে খুব সুস্বাদু লাগে। এটি যেমন খেতেও সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর রয়েছে।

ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে এটি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেই সঙ্গে আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। শীতকালে সবজির মধ্যে খাদ্য তালিকায় অবশ্যই নিয়মিতভাবে ফুলকপি আপনি বাধ্যতামূলক রাখতে পারেন এতে করে আপনার সুস্থতা বজায় থাকবে।

5. টমেটো

শীতকালীন সবজির মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে টমেটো। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় সবসময়ই টমেটো পাওয়া যায় কমবেশি। কিন্তু তুলনামূলকভাবে শীতকালের চাষ করা টমেটোর সাদ বেশি ভালো লাগে। টমেটলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। 

একটি আপেল ফলের মধ্যে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে টমেটো এর মধ্যে। যার কারণে আপনি নিয়মিত শীতকালে সবজি হিসেবে খেতে পারেন। আপনি ইচ্ছে করলে কাঁচা পাকা উভয় ভাবে টমেটো রান্না করে খেতে পারেন। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।

যা আমাদের ত্বক ও চুলের রুক্ষতা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও টমেটোর মধ্যে রয়েছে লাইকোপিন যা আমাদের শরীরের মাংস পেশীকে সতেজ করে মজবুত করে দাঁতের গোড়াকে আরো শক্ত করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি আমাদের দৃষ্টি শক্তিকে উন্নত করে।

6. সবুজ কপি

সবুজ কপি বর্তমানে আমাদের দেশে একটি জনপ্রিয় সবজি হিসাবে স্থান দখল করে নিয়েছেন। সাধারণত শীতকালীন সবজি হিসেবে আমরা সবজির তালিকায় সবুজ কপিকে রাখতে পারি। অনেকেই সবুজ কবিকে আবার ব্রকলি বলে থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। তার পাশাপাশি আয়রন ও ক্যালসিয়ামে ভরপুর।

এটি খেতেও খুব সুস্বাদু। এটি সাধারণত আমাদের রাতকানা রোগ, চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি, ও বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দূর করতে ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগে আক্রান্ত থাকেন সেক্ষেত্রে নিয়মিত সবুজ কপি খেলে উপকারিতা পাবেন।

7. ধনেপাতা

আমাদের বাংলাদেশের যদিও এখন সারা বছর প্রায় কমবেশি ধনেপাতা পাওয়া যায়। তবে শীতকালীন সময়ে ধনেপাতা আরো বেশি পাওয়া যায় এবং খুব সুস্বাদু লাগে। ধনেপাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি,ভিটামিন এ। তার সাথে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এসিড।

যা আমাদের হজম শক্তি করতে সহায়তা করে। ধোনের পাতা খাওয়ার জন্য আপনি সবজির সাথে রান্না করে বা চাটনি তৈরি করেও খেতে পারেন। আপনি যদি ঠোঁট ফাটা, ঠান্ডা লাগা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ধনেপাতা সাধারণত আমাদের দেহের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ধনেপাতা হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে ও শরীরের শক্তি উৎপন্ন করার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ধনেপাতা মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

8.  বাঁধাকপি

বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল। যা আমাদের শরীরের আহারের ক্ষয় রোধ ও মজবুত করতে সহযোগিতা করে। আপনি ইচ্ছে করলে বাঁধাকপি ভাজি করে বা সবজি হিসেবে রান্না করে খেতে পারেন। অনেকে আবার বাঁধাকপি কাঁচা সালাত হিসাবেও খেয়ে থাকেন।

এছাড়াও যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে স্বাস্থ্য ওজন বৃদ্ধিতে ভোগেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি ডায়েট কন্ট্রোল ওজন কমার জন্য নিয়মিত বাঁধাকপি খেতে পারেন এতে করে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। কেননা বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান রয়েছে। যার কারণে এটি সহজে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়া বাধা কপি মারাত্মক রোগ আলসারের প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিতভাবে চালাতে প্রচুর পরিমাণে বাঁধাকপি খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে ক্যালরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত বাঁধাকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ।

মাস ভিত্তিক সবজি চাষ 

বাংলাদেশী সাধারণত সারা বছরই কমবেশি সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। তবে তুলনামূলকভাবে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে সবজির আমদানি হয়। যার কারণে এ সময় কৃষকেরা অধিক পরিমাণে লাভবান হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে থাকে।

তবে অবশ্যই আপনাকে সবজি চাষ করার জন্য কোন মাসে কোন সবজি চাষ করা হয় সে সম্পর্কে আগে থেকে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কেননা আপনি যদি না জানেন যে কোন মাসে কোন ধরনের সবজি চাষ করা হয় তাহলে লাভবান হতে পারবেন না।

চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক মাস ভিত্তিক কি কি সবজি চাষ করা হয়-
  • বৈশাখ মাসের সবজিঃ লাল শাক, দিমা কলমি,, ডাটা, পাতা পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স, পাট শাক, বেগুন, টমেটো, করলা, ঝিঙ্গাc, পুঁইশাক, সাজনা, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়ে থাকে।
  • জ্যৈষ্ঠ মাসে সবজিঃ, ঝিঙ্গা, পটল, কাঁকরোল ধুমা ও চিচিঙ্গা চাষ করা হয়ে থাকে।
  • আষাঢ় মাসে সবজি চাষঃ সাধারণত আসার মাসে বেগুন, টমেটো, সিম, ঢেঁড়স, ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়।
  • শ্রাবণ মাসের সবজিঃ বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, লাউ এছারাও বিভিন্ন ধরনের সবুজ ছাপ চাষ করা হয়।
  • ভাদ্র মাসে সবজি ঃ বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, বেগুন, কুমড়া, লাউ টমেটো, ইত্যাদি
  • আশ্বিন মাসেঃ ফুলকপি, টমেটো, পেঁপে, কাঁচা কলা, কলায় ও ডাটা শাক ইত্যাদি
  • কার্তিকঃ আলু, ওলকপি, মরি, চ বাঁধাকপি ইত্যাদি
  • অগ্রহায়ণঃ পেঁয়াজ, মিষ্টি আলু, টমেটো, শালগম, বেগুন, ফুলকপির, বাঁধাকপি ইত্যাদি
  • পৌষঃ বরবটি, কাকরোল, করলা, গোল আলু, লাল শাক, কলমি শাক ইত্যাদি
  • মাঘঃ আলু, পিঁয়াজ, জ রসুন, টমেটো, ডাল ইত্যাদি
  • ফাল্গুনঃ মিষ্টি আলু, গোল আলু, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি
  • চৈত্রঃ বেগুন, টমেটো, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি

শীতকালে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার

শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক। সে সাথে সাথে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার পাওয়া যায়। লেবু, জলপাই, আমলকি, মালদা, কমলা, আমরা ও চালতা যেগুলো তো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি উপাদান সমৃদ্ধ রয়েছে।

শীতকালে-ভিটামিন-সি-জাতীয়-খাবার

সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী উপাদান থাকে ভিটামিন সি জাতীয় খাবারে। যা আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সেই সাথে আমাদের শরীরকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে ভিটামিন সি প্রয়োজন। আপনি এই প্রয়োজনীয় ভিটামিনসি ফল ও শাকসবজিতে পাবেন।

শীতকালীন সবজি লাউ এর উপকারিতা 

শীতকালীন সবজির উপকারিতা অনেক তবে সে সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে সঠিকভাবে জানতে হবে। লাউ একটি শীতকালীন সবজি ও এর উপকারিতা অনেক। আপনি নিয়মিত লাউ খেলে পানির ঘাটতি পূর্ণ হবে। লাউ এ আছে ভিটামিন এ, বি,সি,ই,কে,ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম,জিংক ও ফাইবার।বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

লাউয়ের থাকা জিংক আমাদের হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।আপনি নিয়মিত লাউ খেলে স্ট্রোক এর হাত থেকে রক্ষা পাবেন। লাউয়ের প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে যা দাঁত ও আমাদের শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও লাউ খেলে পানির ঘাটতি দূর হয়। এতে করে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা সহজে দূর হয়। তাছাড়া লাউয়ের ইনসোমনিয়া থাকার কারণে ভালো ঘুম হয়। তাই লাউ শীতকালীন সবজি হওয়ায় অনেকে ঠান্ডা লাগার ভয়ে খাই না। কিন্তু লাউ খেলে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে না।

শেষ মন্তব্যঃ শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো অনেকেই শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতেন না। সেজন্য আমার আজকের আর্টিকেলটিতে শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কোন সবজি খেলে কি উপকার পাবেন এবং শীতকালীন সবজি কোনগুলো সব সম্পর্কে বলেছি।

আপনারা যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পারেন তাহলে নিয়মিত সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যস্ত করে ফেলুন। এতে করে সুস্থ থাকবেন। শীতকালীন সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলপ বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এ ধরনের পোস্ট পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং কিছু বলার থাকলে কমেন্ট করুন।

ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url