গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? ? গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মেয়ের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কারণ মেনে চলতে হয়। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কিনা তাই আপনাদের জন্য এ সম্পর্কে আজকের এই ব্লগটি।

গর্ভাবস্থায়-জলপাই-খাওয়া-যাবে

আজকের এই ব্লগটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ ও কিভাবে জলপাই খেতে হয়। বিভিন্ন প্রকার জলপাইয়ের প্রকারভেদ এবং গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পেজ সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি তা সম্পর্কে

সাধারণত আমরা সকলেই জানি গর্ভাবস্থায় প্রায় সকল মহিলারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে। আর জলপাইয়ের মধ্যে যে সকল উপাদান রয়েছে তা আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বিশেষ করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। জলপাইয়ের মধ্যে থাকে পলিফেনাল নামক একটি উপাদান।

যা আমাদের শরীরের কোষগুলো কে ফ্রী রেডিক্যাল নামক ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকে রক্ষা করে। এর ফলে আমাদের দেহে ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ থেকে আমরা রক্ষা পায়। এছাড়াও জলপাইয়ের তেল আমাদের হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। জল পেয়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা -৩ ফ্যাটি এসিড যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

জলপাইয়ের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ফাইবার। যা আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য  দূর করে। তবে আমাদের প্রত্যেকেরই গর্ভাবস্থায় খাদ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করা খুবই জরুরী। কেননা এ সময় সামান্য একটি ভুলের কারণে গর্ভবতী ও গর্ভে থাকা সন্তান উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যদিও আমরা জানি যে জলপাইয়ের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে কিন্তু উপকারিতার পাশাপাশি সব ধরনের খাবারেরই কিছু অপকারিতা রয়েছে যেগুলো আমাদেরকে জানতে হবে। ঠিক তেমনি জলপাইয়েরও কিছু অপকারিতা আছে তাই জলপাই খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ মেটে আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

সাধারণত আপনি গর্ভাবস্থায় প্রথমদিকে লবণযুক্ত জলপাই খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। জলপাইয়ের মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রা সোডিয়াম যা গর্ভবতী মেয়েদের উচ্চ রক্তচাপে ঝুঁকি বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও জলপাইয়ে তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট যা আপনার ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। গর্ভ অবস্থায় জলপাই খেলে আপনার শারীরিক অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন আপনি এলার্জি বা অন্য কোন সমস্যায় সম্মুখীন হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জলপাই খেতে হবে। জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকে।

যার ফলে আপনি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত হারে জলপাই খেলে আপনার বদহজম হওয়া বা বমি বমি ভাব হতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন সময়ে জলপাই আপনার জন্য একটি পুষ্টিকর খাবার তালিকায় পড়তে পারে। কিন্তু অবশ্যই আপনাকে মাত্রা পরিমাণ জলপাই খেতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে জলপাই খেলে আপনার শারীরিক সমস্যায় এবং নবজাতকের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? সাধারণত জলপাই ফলটি একটি পুষ্টিকর খাবার। জলপাই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খনিজ, ভিটামিন ও প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও জলপাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ও পটাশিয়াম। আমরা সকলেই জলপাই খেতে পছন্দ করি।

বিশেষ করে জলপাই কাচা না খেলেও আচার বা রান্না করে খেতে প্রায় সকলেই পছন্দ করেন। সাধারণত আঁশ জাতীয় খাবার আমাদের ক্ষুদ্রান্ত ভালো রাখতে সহায়তা করে। জলপাইয়ের খোসায় রয়েছে প্রচুর আঁশ বা ফাইবার জাতীয় উপাদান। যেহেতু ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাবার প্রয়োজন হয়। সেজন্য ক্যান্সার প্রতিরোধে জলপাইয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা জানি জলপাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি আমাদের ত্বক ও দাঁতকে মজবুত করতে সহায়তা করে। আপনাদের মধ্যে যদি কারো বাতির ব্যথা নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি নিয়মিত জলপাই খান তাহলে বাতের ব্যথা কিছুটা পরিমাণ হলেও কমবে।

আরও পড়ুনঃ বিলাতি ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

এছাড়াও অনেকেই ভিটামিন এ অভাবে রাতকানা রোগে আক্রান্ত। তারা যদি নিয়মিত জলপাই খান তাহলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে জলপাই অতুলনীয় ভাবে ভূমিকা পালন করে। জলপাই বিভিন্নভাবে আমাদের ত্বককে সূর্যের হাত থেকে রক্ষা করে। জলপাইয়ের গুনাগুন সম্পর্কে শেষ করা যাবে না।

কিভাবে জলপাই খাবেন গর্ভাবস্থায়

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? আমি বলব গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া একদম নিরাপদ। তবে আপনাকে সতর্কভাবে পরিমাণ মতো জলপাই খেতে হবে। কারণ যে কোন খাবারের অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার কিছু নিয়ম নিম্নে দেওয়া হল-

  • গর্ভাবস্থায় আপনি কাঁচা জলপাই বা জলপাই তেল প্রচুর পরিমাণে খেতে পারেন ।এতে করে সমস্যা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ এভাবে খেলে অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকে না।
  • আপনি ইচ্ছে করলে লবণ দিয়ে সরাসরি কাঁচা জলপাই খেতে পারেন এতে করে বেশি পুষ্টি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • তবে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। কারণ যদি আপনার শরীরে উচ্চ রক্তচাপ থাকে সে ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • গর্ভাবস্থায় হালকা জলপাই থেথা করে লবণ ও মরিচের গুড়া দিয়ে খেতে পারেন এতে করে মুখের রুচি বাড়ে।
  • এছাড়াও জলপাই খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি আচার তৈরি করেও খেতে পারেন।

জলপাইয়ের তেল গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের নিয়ম

জলপাইয়ের তেল সাধারণত একটি পুষ্টিকর তেল হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। সেজন্য গর্ব অবস্থায় জল পায়ে তেল ব্যবহার করা গর্ভবতী মায়ের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ। জলপাইয়ের তেলে তেমন কোন সুগন্ধি যোগ করা থাকে না। যার কারণে যে কোন গর্ভবতী মহিলা সহজে এটি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি বিভিন্নভাবে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক এ সময় কিভাবে জলপাই তেল ব্যবহার করবেন। সাধারণত জলপাই তেল আপনি সালাতের সাথে মিস করে খেতে পারেন। এমন অবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য জলপাইয়ের তেল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। পাশাপাশি এটি সালাদের স্বাদ বাড়াতে বেশ ভূমিকা রাখে।

জলপাইয়ের-তেল-গর্ভাবস্থায়-ব্যবহারের-নিয়ম

এছাড়াও আপনারা গর্ভবতী মায়ের জন্য যখন রান্না করবেন সে ক্ষেত্রেও জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে পারেন কারণ এটি স্বাস্থ্যকর ও বেশ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। জলপাইয়ের তেলে অন্যান্য তেলে চাইতে ক্ষতিকর ফারযুক্ত উপাদান কম থাকে যার কারণে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য জলপাইতেলের রান্না খুবই উপকারী।
জলপাইয়ের তেল আমাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বডি লোশন হিসাবে ভূমিকা রাখে। সেক্ষেত্রে গর্ভবতী মেয়েরা নিয়মিত ভাবে জলপাইয়ের তেল তাদের পেটে এবং ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক নরম ও উজ্জ্বল থাকে। আমরা সকলে গর্ভবতী থাকাক সময় বিশেষ করে পেটে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করে থাকে কারণ এতে করে পেটে দাগ বা ফেটে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে না।

জলপাই এর প্রকারভেদ এবং ব্যবহার

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার জন্য এর প্রকারভেদ এবং বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই জরুরী। জলপাই সাধারণত দুই প্রকার পাওয়া যায়। একটা কালো জলপাই আরেকটা সবুজ জলপাই তবে বেশি ভাগেই সবুজ জলপাই দেখতে পাওয়া যায়। দুই ধরনের জলপাইয়ে রয়েছে পুষ্টি উপাদান।

তবে কালো এবং সবুজ জলপাই উভয়েই স্বাদে একই রকম। সাধারণত যেগুলো কালো জলপাই থাকে এগুলো বয়স একটু বেশি হলেই পেকে যায়। পাশাপাশি কালো জলপাই তুলনামূলকভাবে খেতে একটু মিষ্টি ও নরম প্রকৃতির। পরিমাণে ভিটামিন ই আয়রন বিভিন্ন ধরনের মিনারেল পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম অত্যাধিক পরিমাণে পাওয়া যায়।

অপরদিকে সবুজ জলপাই আপনারা সকলেই চিনেন । এটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ দেখায় এবং এটি তুলনামূলকভাবে জাতীয় হয়ে থাকে। সবুজ জলপাই এর মধ্যে ফ্যাটের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে। গর্ভবতী অবস্থায় খেলে হজমের কাজে সহায়তা করে। সবুজ জলপাইয়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? জল পায়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ রয়েছে তবে আপনি যখন জলপাই খাবেন অবশ্যই এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। বিশেষ করে গর্ব অবস্থায় জলপাই খাওয়ার ব্যাপারে এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। জলপাইয়ের তেল ত্বকে ব্যবহার ও রান্নার কাজে ব্যবহৃত করে থাকি।

এছাড়াও ত্বকের যত্ন ও চুলের জন্য জলপাই তেল ব্যবহার করা খুবই উপকারী। গর্ভাবস্থায় সাধারণত পেটে টানটান ভাব দেখা দেয় সেজন্য আপনি যদি নিয়মিত জল পায়ে তেল পেটে মালিশ করেন তাহলে পেট নরম ও মুসলিম হয়ে থাকবে। আপনি ইচ্ছে করলে শালা তৈরির ক্ষেত্রেও জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করে খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি?? গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার পাশাপাশি একজন গর্ভবতী মহিলাকে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা পরিবেশ তৈরি করা অপরিহার্য অংশ। সাধারণত এ সময় শরীরের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। সেজন্য এ সময় নিয়মিত হাটাহাটি ব্যায়াম করা ও পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম নেয়া একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই উপকারী।

এর পাশাপাশি অবশ্যই গর্ভাবস্থায় এমন কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত রাখা উচিত যেগুলো খেলে দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। পাশাপাশি অবশ্যই গর্ভবতী মহিলাদেরকে পুষ্টিকর খাবার ও মানসিক শান্তির জন্য ভালোলাগা এবং খারাপ লাগা দিকগুলো চিহ্নিত করতে হয়। যাতে করে তারা মানসিক চাপ থেকে নিজেকে সুস্থ রাখতে পারে।

গর্ভাবস্থায় যেহেতু একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য পুষ্টিকর খাবার ভিটামিন এ ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে জলপাই একটি পুষ্টিকর খাবার হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। জলপাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন সি ও ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান রয়েছে। যা গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ও বোনের গঠনে সহায়তা করে।
এ সময় পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে তার ত্বকের ও যত্ন নিতে হয়। ত্বকের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে একজন গর্ভবতী মহিলা জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে পারেন। গর্ভ অবস্থায় সাধারণত পুরো শরীর শুষ্ক শুষ্ক ভাব এবং টানটান প্রকৃতির হয়ে ওঠে যার কারণে ব্যবহার করলে ত্বক নরম ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবারই আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খেতে হয়।। কারণ অতিরিক্ত খাবার খেলে আপনার শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আর এমন অবস্থায় সাধারণত চিকিৎসকেরাও সঠিক চিকিৎসা দিতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োড ব্যবহার করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে হবে।

গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ১০ টি থেকে ১৫ টি জলপাই খাওয়া স্বাস্থ্যকর মনে করা হয়। আপনি যদি গর্ব অবস্থায় থাকাকালীন প্রতিদিন ১০ টি থেকে ১৫ টি জলপাই খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে পুষ্টির পাশাপাশি আপনার গর্ভের সন্তানেরও পুষ্টি চাহিদা পূর্ণ হবে। সাধারণত জলপাই প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।

সুস্থ রাখতে এবং রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করাতে ভূমিকা পালন করে। খাওয়ার উপকারিতা অনেক। গর্ভাবস্থায় যদি আপনি প্রতিদিন ১০ থেকে 15 টি জল প্রায় না খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি জলপাইয়ের তেল ২ চা চামচ করে প্রতিদিন খেলে সে পরিমাণ হবে। তবে অবশ্যই আপনাকে জলপাইয়ের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

সেই সাথে আপনাকে জলপাই এবং জলপাইয়ে তেল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বুঝে নিতে হবে। এ সময় সাধারণত মায়ের সাথে সাথে শিশুর বিকাশের দিকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য জলপাই এবং জলপাই তেল নিয়মিত খেতে পারেন। যেহেতু সবসময় জলপাই পাওয়া যায় না সে ক্ষেত্রে আপনি যে কোন জায়গাতে জলপাই তেল নিয়ে এসে সালাত বা মুড়ি মাখিয়ে খেতে পারেন।

জলপাই সংরক্ষণ করে রাখার নিয়ম

আমরা সকলেই জানি সাধারণত শীতকালীন সবজি বা ফল। সেজন্য আমরা সকলেই একটুও সজল পাই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। যেহেতু সব সময় জলপাই হাতের নাগালে পাওয়া যায় না সে কারণে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত জলবায় সংরক্ষণ করা যায়। গোটা করে জলপাই সংরক্ষণ করা যায় খুব সহজে।

ইচ্ছে করলে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই গোটা জলপাই সারা বছর ধরে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি বাজার থেকে জিপার ব্যাগগুলো সংগ্রহ করে এনে কিছু জল পায়ের গোটা বেঁচে এগুলো জিপার ব্যাগের মধ্যে ঢুকে ভালোভাবে মুখটা বন্ধ করে দিতে হবে যাতে করে ভিতরে বাতাস প্রবেশ না করতে পারে। এরপর এগুলো ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।

জলপাই-সংরক্ষণ-করে-রাখার-নিয়ম

এভাবে জলপাই সংরক্ষণ করলে দীর্ঘ এক বছর ব্যবহার করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনি লবণ পানিতে আধা সিদ্ধ করে বয় মেরে রেখেও জলপাই সংরক্ষণ করতে পারেন। তাছাড়া আপনি লবণ পানি দিয়েও জলপাই সংরক্ষণ করতে পারেন একটি বোয়ামে। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করে খেতে পারেন। রান্না করে খাওয়া যায়।
এছাড়া আপনি যদি মনে করেন আরো দীর্ঘদিন ধরে জলপাই সংরক্ষণ করবেন তাহলে বাজার থেকে জলপাই কিনে এনে সেগুলোর গোটা বেজে লবণ ও পানি দিয়ে আদা সিদ্ধ করে নিয়ে সেগুলো হালকা রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন আবার আপনি ইচ্ছা করলে বিলিন্ডারে ব্লেন্ড করেও দীর্ঘদিন ধরে জল পায় সংরক্ষণ করতে পারেন পাশাপাশি আচারও করা যায়।

জলপাই খাওয়ার উপকারিতা 

জলপাই খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে। যা আমরা সচরাচর খুব কম সংখ্যক মানুষ জানি। যার কারণে আমরা এখনো জলপাইয়ের গুনাগুন থেকে দূরে আছি।এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কিন্তু জলপাই খাওয়ার ও কিছু অপকারিতা আছে। চলুন প্রথমে জলপাই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানি-
  • চোখের জন্য উপকারিঃ জলাপাই এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ উপাদান আছে। যা আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।পাশাপাশি রাতকানা রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিস এখন একটি কম বেশি সকলের হয়ে থাকে। জলাপাইয়ে আছে মনোস্যাকারাইড ও ফ্যাট যা আমাদের শরীরের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। যা ফলে ইনসুলিন নেওয়ার তেমন একটা প্রয়োজন হয় না।
  • ত্বক ও চুলের যত্নেঃ জলপইয়ের তেলে থাকে এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। জলপাইয়ের তেল চুলের গোড়া মজবুত করে এবং পাশাপাশি ঝলমলে ও চুল পড়া কমে। পাশাপাশি সূর্যের রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
  • লৌহের ঘাটতি পূরণঃ জলা পইয়ে রয়েছে লৌহ জাতীয় খনিজ। যা আমাদের দেহে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য প্রয়োজন হয়। লৌহের অভাবে আমাদের শরীর দূর্বল, অক্সিজেন কমে যায় ও অ্যানিমিয়া হয়ে থাকে। তাই জলপাই আমাদের শরীরে লৌহ জাতীয় খাবার তৈরি করে এবং লৌহকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে।
  • পিত্তথলিতে পাথরঃ আমাদের পিত্তথলিতে পাথর হলে বমি ভাব ও পেট ব্যথা করে। এমন অবস্থায় জলপাই পিত্তথলিতে পাথর তৈরি প্রক্রিয়া ধীর গতি করে। আপনি নিয়মিত জলপাই খেলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কম হয়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ জলপাইয়ে রয়েছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • হাড় ভালো রাখেঃ জলপাই আছে মনোস্যাচুরেইড। যা আমাদের শরীরের হাড়কে ক্ষয় রোধ থেকে রক্ষা করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধঃ জলাপাইয়ে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই যা মুক্তি কণিকা ধ্বংস করে এবং পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
  • হৃদরোগ প্রতিরোধঃ জলা পইয়ে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগ থেকে মুক্তি রাখতে সাহায্য করে।
আশা করি আপনারা জলপাই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আশা করি এখন জলপাই খেতে আগ্রহী হবেন।

জলপই খাওয়ার অপকারিতা 

সব কিছুর কিছু অপকারিতা আছে। ঠিক তেমনি জলপাই পাওয়ারও অপকারিতা আছে। যা জানা আমাদের প্রত্যকের প্রয়োজন। চলুন জেনে নিই জলপাই খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত - 
  • পেটে গ্যাস হওয়াঃ জলপাইয়ের খোসাতে আঁশ জাতীয় উপাদান আছে। আপনাদের মধ্যে অনেকের এই আঁশ খাওয়াতে পেটে গ্যাস বা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • এলার্জিঃ অনেকের জলপাই খাওয়ার ফলে এলার্জি হতে পারে। ত্বক ফুলে ও চুলকাতে পারে।
  • কিডনি সমস্যাঃ যদি আপনার কিডনি সমস্যা থাকে তাহলে পটাশিয়াম জাতীয় খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হয়।আর জলপাইয়ের প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে।তাই কিডনি সমস্যা থাকলে জলপাই খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • ওষুধের পাশাপাশিঃ এমন কিছু ওষুধ আছে যেগুলোর পাশাপাশি জলপাই খাওয়া ঠিক না।যেমন- রক্ত পাতলা হওয়া ওষুধের সাথে জলপাই খেলে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • মস্তিষ্কের রোগঃ জলা পইয়ে আছে মনোস্পেস্যাচুরেইড আর অতিরিক্ত এটা খাওয়া হলে আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাহলে আপনারা উপরোক্ত ব্যাখ্যা থেকে জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আশা করি আপনারা সচেতনতা অবলম্বন করে জলপাই খাবেন।

লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

আমি পুরো ব্লগটি জুড়ে গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি? উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি জলপাই খাওয়ার নিয়ম ও গর্ভাবস্থায় কি পরিমাণ খেতে হবে। আরও জলপাইয়ের পুষ্টি উপাদান ও প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।আশা করি আপনারা গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি?  উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
যদি আপনারা ব্লগটি পড়ে উপকৃত বা ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ব্লগে বানান বা কোন শব্দ ভুল থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর এ ধরনের পোস্ট পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ভালো থাকুন।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url