গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও কেন হয়। এমন অবস্থায় ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি এবং কিভাবে চিকিৎসা নেবেন।

গর্ভাবস্থায়-ডায়াবেটিসের-লক্ষণ-ও-করণীয়-উপায়

এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনারা আরো জানতে পারবেন এর প্রভাব কি রকম ভাবে নবজাতকের ওপর পড়ে এবং চিকিৎসা কি তা সম্পর্কে।

পেজ সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে আমাদের সাথে সকলকে সচেতন হতে হবে।সাধারণত আপনারা যে কেউ ডায়াবেটিসে গর্ভ অবস্থায় আক্রান্ত হতে পারেন। ডায়াবেটিস বর্তমানে এমন একটি অসুখ যে যেকোনো কার ওই হওয়া সম্ভব না থাকে। সাধারণত গর্ব অবস্থায় আপনার রক্তে সুগারের পরিমাণ আগে চাইতে তুলনামূলকভাবে বেড়ে গেলে তখন এ ধরনের ডায়াবেটিসকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়ে থাকে।

তবে গর্ভকালীন ডাইবেটিসে তেমন কোনো বিশেষ লক্ষণ দেখা যায় না। এমনি সাধারণত ডায়াবেটিসের যে সকল লক্ষণ থাকে সেগুলোই প্রতিফলিত হয়। অনেক সময় লক্ষণ দেখা গেল ডায়াবেটিস না হওয়া সম্ভব না থাকে। গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার সময় সাধারণত ডায়াবেটিস ধরা পড়ে।

আপনি গর্ভবতী থাকা অবস্থায় যদি আপনার ঘন ঘন পিপাসা লাগে এবং আগের তুলনায় বেশি প্রসাবে চাপ বেড়ে যায়। তার পাশাপাশি শরীরের ক্লান্তি বোধ মনে হয় তাহলে আপনি দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে পরীক্ষা করে নিতে পারেন আসলে আপনার ডায়াবেটিস আছে কিনা। সাধারণত এ সকল লক্ষণথাকলেও ডায়াবেটিস না হওয়া সম্ভব না থাকে।

গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা কিভাবে বুঝবেন

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে সাধারণত আপনি সহজে বুঝতে পারবেন না। তেমন কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। সাধারণত গর্ভাবস্থায় এমনিতেই  শরীরের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমত আপনাকে ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে যখন ডক্টর চেকআপের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন।

আরও পড়ুনঃ কাঁকরোল খাওয়ার নিয়ম-উপকারিতা ও অপকারিতা

এবং সে সাথে রক্তের গ্লুকোজ মাপার জন্য আপনাকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমন অবস্থায় পরীক্ষা করার পর ডায়াবেটিস থাকলে এর মাধ্যমে চিহ্নিত হয়। আর আপনি যদি মনে করেন গর্ভবতী অবস্থায় প্রথম পদক্ষেপে আপনার ডায়াবেটিস আছে কিনা এটি আপনি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে চাইছেন।

 তাহলে আপনি ইচ্ছে করলে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে যেতে পারেন এরপরেও কিছু লক্ষণ শনাক্ত করা হয়ে থাকে নিম্নে এগুলো দেওয়া হলো।

  • আপনার যদি গর্ভধারণ করার আগে স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন বেশি থাকে।
  • আপনার বয়স যদি ২৫ বছরের বেশি হয় সেক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময় ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আপনার প্রথম গর্ভকালীন সময়ে যদি ডায়াবেটিস থাকে। সেক্ষেত্রে আপনার দিতে বা ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আপনার পরিবারের কারো যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ বা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনারও ডায়াবেটিস হতে পারে।
  • তাছাড়া যদি আপনার প্রথম সন্তান ৪ কেজির বেশি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রেও আপনার পরবর্তীতে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • এছাড়াও যদি আপনার আগে থেকে কিছু লক্ষণ ডায়াবেটিসের পরিলক্ষিত হয় সেক্ষেত্রে বাচ্চা নেওয়ার পরে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
গর্ভবতী থাকা অবস্থায় তেমন কোন ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয় না। তবে ডাক্তারের চিকিৎসার মাধ্যমে সেগুলো পরিলক্ষিত হয়। যে কোন মানুষ এবং পানি পিপাসা স্বাভাবিকভাবে এই লক্ষণগুলো থাকে। তা বলে আপনার ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। এগুলো থাকলে যে আপনার ডায়াবেটিস হবে এমন কথা না।

ডায়াবেটিসের প্রভাব গর্ভকালীন অবস্থায়

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই সঠিক ধারণা থাকা জরুরী। কেন না অনেক সময় ডায়াবেটিস থাকার পরেও স্বাভাবিক সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় যদিও গর্ভবতী মায়ের কোন সমস্যা হয় না।


কিন্তু নবজাতক শিশুর বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গর্ভবতী অবস্থায় যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন সে ক্ষেত্রে আপনার পেটের সন্তানের আকৃতি তুলনামূলকভাবে বড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি আপনার বাচ্চা প্রসবের জন্য ওষুধ বা সিজারিং পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

গর্ভবতী অবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে সব সময় প্রেসারে পরিমাণ আপডাউন করে। এবং ৩৭ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা প্রসব হয়ে যায়। গর্ভে শিশু যে তরলে থাকে এটি বেশি হয়ে গেলে অনেক সময় অনেক আগেই প্রসব হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। আপনি যদি গর্ভবতী অবস্থায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত সে ক্ষেত্রে আপনার বাচ্চা রোড ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বাচ্চা হওয়ার পরে তার সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে আবার কমে যেতে পারে বাচ্চার চোখের সাদা অংশ হলদাটে ভাব হয়ে যায়। এমন অবস্থায় এমন অবস্থায় আপনার বাচ্চা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও আপনার শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিবে। যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাহলে আপনার পুরো শরীরে এলার্জির প্রভাব সৃষ্টি হবে।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে চিকিৎসা

গর্ভকালীন সময়ের ডায়াবেটিস হলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দেয়।। এগুলো আপনাকে এড়িয়ে চলার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। প্রয়োজনে বাড়িতে সুগার মাপার যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। প্রতিনিয়ত আপনার সুগার ঠিক আছে কিনা এটি পরিমাপ করে নিতে হবে।


পাশাপাশি যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন সে অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। পার্থ পক্ষে আপনাকে সবসময় চেষ্টা করতে হবে যাতে করে আপনার শরীরে সুগারের মাত্রা সব সময় ঠিক থাকে। এ সকল সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনাকে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায়-ডায়াবেটিস-হলে-চিকিৎসা

আপনি যদি গর্ভবতী অবস্থায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে স্বাভাবিক অবস্থায় গেটের আগে অর্থাৎ ৪১ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা প্রসব করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসব বেদনা না উঠে সেক্ষেত্রে আপনাকে কৃত্রিমভাবে ওষুধের মাধ্যমে ব্যথা উঠিয়ে বা সেজারিংয়ে মাধ্যমে।

অপেক্ষা করবেন তাহলে আপনি একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন কারণ এতে করে আপনার এবং বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাদের ডায়াবেটিস হওয়ার কারণে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায় এবং অসতর্কতা ভাবে চলাচলের জন্য পেটে সাত থেকে আট মাসের বাচ্চা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পুনরায় বাচ্চা নেয়ার পরিকল্পনা

আপনি যদি আগে থেকেই কখনো জেনে থাকেন যে আপনার গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আমি বলব আপনি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জ্ঞান ধারণা নিয়ে বাচ্চা কনসিভ করবেন।

আপনি যদি জেনে থাকেন যে আপনার ডায়াবেটিস আছে। সেক্ষেত্রে আমি বলব আপনি বাচ্চা নেয়ার জন্য একটু সময় নিন এবং ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে আনার চেষ্টা করুন। কারণ যদি আপনি অপরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ করে থাকেন তবে আপনার এবং বাচ্চা উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যদি আপনার মনে হয় যে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে। সে ক্ষেত্রে আপনি বাচ্চা কনসিভ করতে পারেন। তারপরেও প্রথম সপ্তাহে আপনি পুনরায় আরেকবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নিন। এরপর আবারও ২৪ সপ্তাহ থেকে ২৮ সপ্তাহে আরেকবার আপনি ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নিন। কারণ প্রথম দিকে যদিও ডায়াবেটিস স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। 


শেষের দিকে আবার ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। তবে আপনার সুবিধার কারণে আপনি একটি সুগার পরিমাপ করার মেশিন কিনে নিজে নিজে প্রতি সপ্তাহে একবার করে অন্তত ডায়াবেটিস আছে কিনা এটি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন। যেহেতু আপনার আগের গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস ছিল সেহেতু পুনরায় ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ থেকেই যায়।

এমন অবস্থায় ডায়াবেটিস হলে কি ধরনের ফল খাওয়া যায় না

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে সচেতন হতে হবে। সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস হলে ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য ডক্টরের ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। কারণ ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে চিনি বিদ্যমান থাকে যার কারণে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।

তবে ফলের মধ্যে আপনি বেরি ফল খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইডেট তুলনামূলকভাবে কম থাকে। যার কারণে গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস হলো এই ফুলটি খাওয়ার জন্য উত্তম মনে করা হয়ে থাকে। অনেকেই আবার গর্ভকালীন সময়ে আমের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে খেয়ে থাকেন কিন্তু পরিমাণ তুলনামূলকভাবে।

আপনার ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া সম্ভব না থাকে। পাশাপাশি আপনাকে অবশ্যই ডায়েট কন্ট্রোল করে চলতে হবে এবং সুগার নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। ডাইবেটিস থাকলে আপনি কলা ও আঙ্গুর থেকে দূরে থাকুন। কলাতে প্রচুর পরিমান কার্বোহাইডেট রয়েছে। কিন্তু দেরিতে কার্বোহাইডেটযুক্ত ভিটামিন কম থাকে। যার কারণে গর্ভকালীন সময়ে এই বেরি ফল গুরুত্বপূর্ণ।

যদিও ডক্টররা গর্ভকালীন সময়ে ফলের রস খাটে উপদেশ দিয়ে থাকে কিন্তু আমি বলব এই সময়ের ফলে রস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ফলের রসে প্রাকৃতিকভাবে চিনির উপাদান বেশি থাকে যার কারণে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। অপরদিকে বেরি ফলে কার্বোহাইডেট কম থাকায় এর সাথে লেবু এবং মাংস, মটরশুঁটি, রুটি এগুলো যোগ করে খাবার তালিকায় আপনি রাখতে পারেন।

গর্ভের সন্তানের ক্ষতিকর দিক সমূহ

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে যদি আপনি সচেতন না হন সে ক্ষেত্রে আপনার গর্ভের নবজাতকের ক্ষতি হওয়া সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বাচ্চা জন্মগতভাবে এই প্রতিবন্ধী সম্পূর্ণ হয়। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

সাধারণত আপনি যদি গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে হবে। এমন অবস্থায় যেহেতু ওষুধ বা কোন ধরনের ইনজেকশন নেয়া ঠিক না তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হয়।

গর্ভের-সন্তানের-ক্ষতিকর-দিক-সমূহ

পাশাপাশি গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বাচ্চাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। অনেক সময় দেখা যায় আপনার গর্ভের বাচ্চাটি তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক এর চেয়ে আকারে বড় হয়ে যায় ফলে প্রসবের সময় নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।


এমনকি যদি আপনার বাচ্চা সুস্থ স্বাভাবিকভাবে হয়েও যায় তাহলে বা চালু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পরেও যদি কোন ব্যক্তি সেটি সম্পর্কে সচেতন না হয়ে নিজের ইচ্ছা স্বাধীনভাবে ডায়েট করার পরিকল্পনা করে সেক্ষেত্রে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থেকে যায়। কারণ গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস হওয়া স্বাভাবিক লক্ষণ না।

গর্ভকালিন ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল ডেলিভারি হয়

সাধারণত গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস আছে কিনা এটি নিশ্চিত হতে হয় সুগার পরিমাপ করার মাধ্যমে। তাই আপনারা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করনীয় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। আপনি গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে এমন অবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি বিষয়।

নিয়মিতভাবে আপনাকে সুগার পরীক্ষা করতে হবে। যাতে করে আপনি এবং আপনার নবজাতকের সুস্থতা বজায় থাকে। গর্ভকালীন সময়ে খালি পেটে সুগার পরিমাপ করে যদি দেখেন এর পরিমাপ ৪.৫ মিলি মোল বা পুরোপুরি ৫ হচ্ছে। তারপর আপনি খাবার খাবেন এবং ২ ঘন্টা পর পুনরায় পরীক্ষা করুন। 
এবার যদি ৫ থেকে ৬ মিলি মোল হয় তাহলে আপনার নরমাল ডেলিভারি হওয়ার আশা থাকে। তবে গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস ধরা পড়লে আগেই সিজার করে বাচ্চা উঠায় নেওয়া ভালো। কারণ নবজাতকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনার নরমাল ডেলিভারি আশা ছেড়ে দিতে হবে। যদিও আমাদের দেশে নরমাল ডেলিভারি নেই বললেই চলে।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে করণীয়

গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস হলে আমরা সাধারণত ঘাবড়ে পড়ি। এমন না ঘাবড়িয়ে আমাদেরকে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। আপনি যদি করণীয় উপায় সম্পর্কে না জানেন তাহলে নবজাতকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভকালিন সময়ে ডায়াবেটিস হলে নিম্নের করণীয় উপায় গুলো মেনে চলুন- 
  • প্রথমত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলাফেরা করুন।
  • সব সময় বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। যেমন- ফলের রস।
  • আপনি ইচ্ছে করলে পেয়ারা,বরই ও সবুজ আপেল খেতে পারেন।
  • প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খান।
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন।
  • খাবারের ২ ঘন্টা পর পর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করুন।
  • যদি আপনার বুক ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা এগুলো হলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করবেন।
  • বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খান।
  • যে সব খাবারে ফাইবার আছে সেগুলো পরিমাণে বেশি বেশি করে খান।
  • চিনি ছাড়া চা খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন এবং পাশাপাশি ব্যায়াম করবেন।
  • ডিম, দুধ, চিড়ামুড়ি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
উপরোক্ত সকল নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন আশা করি। 

লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে পুরো আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এর প্রভাব ও ফল খাওয়া যাবে কিনা। ডায়াবেটিস হলপ নরমাল ডেলিভারি হয় কিনা এবং এর করনীয় কি। আশা করি আপনারা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।

আমি নিজে প্রমাণিত গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক ক্ষতি প্রভাব। আমার ভাবির এমনিতেই স্বাভাবিক অবস্থায় ডায়াবেটিস থাকে না।  কিন্তু বাচ্চা পেটে আসার সাথে সাথে ডায়াবেটিস হয়ে যায়। ওনার ২ ছেলে ও ১ মেয়ে ৮ মাস হওয়ার সাথে সাথে পেটে মারা গেছে।বিস্তারিত জানতে এখানে চাপ দিন

তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও আজ ১৫ বছর ধরে মা ডাক শুনতে ব্যর্থ হচ্ছেন বার বার। তাই আপনারা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও করণীয় উপায় সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন ও সচেতনতা অবলম্বন করুন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এ ধরনের পোস্ট পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url