গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে চাইলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে শেষ করুন। সাধারণত গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও ফলমূল খাওয়ার নিয়ম রয়েছে।
আজকে আমরা আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবো গর্ভাবস্থায় কিভাবে আয়রন ও
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন এবং পাশাপাশি কোন ফল খাওয়া যাবে। গর্ভবতী থাকা
অবস্থায় কি কি করনীয় ও কতটুকু পরিমাণ বিশ্রামের প্রয়োজন তা বিস্তারিত জানতে
পারবেন আর্টিকেলটির মাধ্যমে।
পেজ সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা
- ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাবেন না
- গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল খাবেন
- গর্ভাবস্থায় মেয়েদের করনীয়
- গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম না খেলে কি হয়
- আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে খাওয়া যাবে কি
- আয়রন ট্যাবলেট খেলে ঘুম কম হয়
- আয়রনের প্রধান উৎস
- গর্ভাবস্থায় কত মাস থেকে ক্যালসিয়াম খাওয়া প্রয়োজন
- গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে লেখকের শেষ মন্তব্য
গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা
সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে গর্ভবতী মাকে আয়রন ট্যাবলেট ও
ক্যালসিয়াম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সাধারণত তিন মাস হওয়ার
পরে গর্ভবতী মাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার
জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কেননা এমন অবস্থায় যদি গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা ও লোহিত রক্তকণিকায় প্রোটিন
হিমোগ্লোবিন না থাকে সে ক্ষেত্রে আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
অন্যদিকে একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভে থাকা শিশুর সুস্থ বিকাশ এর জন্য গর্ভবতী মা
কে পর্যান্ত পরিমাণ আয়রন খেতে হয়।
আর সাধারণত গর্ভাবস্থায় শরীরে আয়রনের ঘাটতি অতিরিক্ত হয়ে পড়ে। সেজন্য অনেক
ক্ষেত্রে ওষুধের পাশাপাশি আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন
চিকিৎসকেরা। আপনি খেয়াল করে দেখবেন অন্যান্য সময়ে তুলনায় গর্ভবতী অবস্থায়
থাকাকালীন আপনার শরীরে আয়রনের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়।
আর এ সকল চাহিদা পূরণের জন্য অবশ্যই আপনাকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খেতে হবে এবং
পাশাপাশি আয়রন ট্যাবলেট খাওয়াই অভ্যস্ত হতে হয়। গর্ভবতী মা ও শিশু উভয় ক্ষতি
হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাব
থাকলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তার পাশাপাশি গর্বে শিশু ও
ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ হলুদ মেশানো দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
তবে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস পর থেকে আয়রন ও
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এবং এমন অবস্থায় আয়রন ও
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একই সময়ে একসাথে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ আপনি যদি
একসাথে ক্যালসিয়াম আয়রন ওষুধ খান তাহলে এর কার্যকরী উপকারিতা নষ্ট হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও তার গর্ভে থাকা শিশুর রক্তশূন্যতা দূর করার
জন্য আয়রন ট্যাবলেট খেতে হয়। সাধারণত নবজাতকের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তৈরিতে
সহায়তা করে। এছাড়াও গর্ভ অবস্থায় যদি আপনার শরীরে ঘাঁটি দেখা দেয় তাহলে
কষ্টকাঠিন্যর নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে যার কারণে পরবর্তীতে আপনার গর্ভপাত
এর ঝুঁকি থাকে।
আপনি যদি গর্ভবতী থাকার সময় নিয়মিত আইরন ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার
শরীরের রক্তের কণিকা বৃদ্ধি পাবে যার কারণে আপনার নবজাতকের অক্সিজেন পেতে সমস্যা
হয় না। তাছাড়া গর্ভবতী অবস্থায় আপনার শরীলে আগুনের ঘাটতি থাকলে নবজাতকের এর
সুষ্ঠু বিকাশ হয় না সাথে সাথে ওজন কম হয় এবং অপরিচিতভাবে জন্মে থাকে।
গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা অনেক যার কারণে আপনি গর্ভবতী
হওয়ার পরের তিন মাস থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত আইন ট্যাবলেট খেতে
হবে এবং আপনার ডেলিভারি না হওয়া পর্যন্ত একই নিয়মে আয়রন ট্যাবলেট খেতে থাকবেন।
এতে করে আপনার শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিবে না পাশাপাশি নবজাতকের বৃদ্ধি ঘটাতে
সহায়তা করবে।
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে
সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা গর্ভবতী থাকাকালীন বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কারণ
মেনে চলতে হয়। এমন অবস্থায় শরীরে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সহজে
চিকিৎসকেরা চিকিৎসা দিতে পারে না। সে কারণে এমন অবস্থায় প্রত্যেকটি মেয়েকে
সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়।
চলুন জেনে নেই ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
-
আমরা সাধারণত জানি ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁতের গঠন মজবুত করতে সহায়তা করে সেই
সাথে সাথে গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম আমাদের গর্ভে থাকা শিশুর হার ও দাঁতের
গঠনকে মজবুত করতে সাহায্য করে।
-
এছাড়া গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া একটি প্রয়োজনীয়
উপাদান। কারণ গর্ভবতী অবস্থায় গর্ভে থাকা শিশু মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম
গ্রহণ করে যার ফলে মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে পরিমাণ ক্যালসিয়াম
পাওয়া থেকে বিরত থাকে। এতে করে শিশু সুষ্ঠ বিকাশ ঘটে না।
-
আপনি গর্ভবতী অবস্থায় নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে আপনার শিশু স্নায়ু ও
পেশীর কার্যকারিতা রক্ষা পায়।
-
এছাড়াও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট আপনার শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে সহযোগিতা করে।
সেজন্য অবশ্যই গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে আপনি নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট
খাবেন। কারণ এ অবস্থায় আপনি নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে আপনার
ডেলিভারির সময় রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
-
আপনি যদি গর্ভবতী সময়ে নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খান সেক্ষেত্রে আপনার
উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনা খুব সহজ হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাবেন না
গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল খাবেন
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের করনীয়
-
গর্ভবতী থাকা অবস্থায় অবশ্যই আপনি খাবার খাওয়ার আগে আপনার হাত পরিষ্কার করে
কোন সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিবেন।
-
গর্ভবতী থাকা অবস্থায় অবশ্যই ভারী জিনিসপত্র চারা থেকে বিরত থাকবেন।
-
এমন অবস্থায় অবশ্যই অবশ্যই আপনি মাংস অথবা যেকোনো সবজি খাওয়ার ক্ষেত্রে আদা
সিদ্ধ খাবেন না সেগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ করে খাবেন।
-
যে কোন ফল খাওয়ার আগে পরিষ্কার পানির মাধ্যমে ধুয়ে তারপরে খাবেন।
-
এ সময় অতিরিক্ত ক্ষুদা লাগে তাই দিনে চার থেকে পাঁচ বার করে খাবেন।
-
আই সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার প্রথম তিন মাস আমরা ঝুকির মধ্যে থাকি। তাই এমন
অবস্থায় আপনি কোথাও ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
-
মাসে অন্তত দুই থেকে তিনবার ডক্টরের কাছে চিকিৎসার জন্য যাবেন এবং নিয়মিত
চেকআপ করবেন।
-
গর্ভ অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে অবশ্যই আপনি খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিছানায়
শুয়ে পড়বেন না। খাবার খাওয়ার পর দশ মিনিট হাটাহাটি করবেন।
-
আপনি যখন গর্ভবতী থাকবেন সে সময় অবশ্যই আপনাকে দুঘন্টা অন্তত বিশ্রাম নিতে
হবে এবং কমপক্ষে রাত্রে নিয়মিত দু'ঘণ্টা থেকে চার ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
-
গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে অবশ্যই আপনি টেনশন থেকে দূরে থাকবেন। কারন এই সময়
অতিরিক্ত টেনশন করলে নবজাতকের ওপর প্রভাব সৃষ্টি হয়।
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম না খেলে কি হয়
আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে খাওয়া যাবে কি
আয়রন ট্যাবলেট খেলে ঘুম কম হয়
আয়রনের প্রধান উৎস
-
আয়রনের চাহিদা পূর্ণ করার জন্য আপনি নিয়মিত এক কাপ সিদ্ধ সিমের বিজি খেতে
পারেন। এতে ৫.২ মিলিগ্রাম আইরন রয়েছে।
-
এছাড়াও আপনি এক কাপ সেদ্ধ মটরশুটি খেতে পারেন। যার মধ্যে ৪.৮ মিলিগ্রাম
আয়রন পাবেন।
-
মিষ্টি কুমড়া সিমের বিচি এক কাপ ভেজে নির্মিত খাবেন। এতে করে আপনি ৪.২ মিলি
গ্রাম আয়রন এর ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন।
-
1 থেকে 1/2 কাপ পালং শাক সিদ্ধ করে প্রতিদিন খাওয়া অভ্যস্ত হন। তাতে করে
আপনি ৩.২ মিলিগ্রাম আয়রন পেতে পারেন।
-
এক কাপ ৪৫ সিরিয়াল করে নিয়মিত খান তাহলে ২৪ মিলিগ্রাম আয়রনের ঘাটতি পূরণ
করতে পারবেন।
গর্ভাবস্থায় কত মাস থেকে ক্যালসিয়াম খাওয়া প্রয়োজন
এছাড়াও যদি আপনার বাচ্চার এমন অবস্থায় কোন ও ত্রুটি থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে এ ধরনের খাবার খেলে তা সম্পূর্ণভাবে দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার কারণে গর্ভবতী প্রথম তিন মাসের তালিকায় সব সময় ফলিক অ্যাসিড, জিংক, প্রোটিনসম্মত খাবার নিয়মিত খেতে হয়। তবে যদি আপনার শরীরে রক্ত পরিমান আয়রন ও কলসিয়াম থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে আলাদা বিষয়।
ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url