গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে চাইলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে শেষ করুন। সাধারণত গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও ফলমূল খাওয়ার নিয়ম রয়েছে।

গর্ভাবস্থায়-আয়রন-ও-ক্যালসিয়াম-ট্যাবলেট-খাওয়ার-নিয়ম

আজকে আমরা আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবো গর্ভাবস্থায় কিভাবে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন এবং পাশাপাশি কোন ফল খাওয়া যাবে। গর্ভবতী থাকা অবস্থায় কি কি করনীয় ও কতটুকু পরিমাণ বিশ্রামের প্রয়োজন তা বিস্তারিত জানতে পারবেন আর্টিকেলটির মাধ্যমে।

পেজ সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে গর্ভবতী মাকে আয়রন ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সাধারণত তিন মাস হওয়ার পরে গর্ভবতী মাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

কেননা এমন অবস্থায় যদি গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা ও লোহিত রক্তকণিকায় প্রোটিন হিমোগ্লোবিন না থাকে সে ক্ষেত্রে আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। অন্যদিকে একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভে থাকা শিশুর সুস্থ বিকাশ এর জন্য গর্ভবতী মা কে পর্যান্ত পরিমাণ আয়রন খেতে হয়।

আর সাধারণত গর্ভাবস্থায় শরীরে আয়রনের ঘাটতি অতিরিক্ত হয়ে পড়ে। সেজন্য অনেক ক্ষেত্রে ওষুধের পাশাপাশি আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। আপনি খেয়াল করে দেখবেন অন্যান্য সময়ে তুলনায় গর্ভবতী অবস্থায় থাকাকালীন আপনার শরীরে আয়রনের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়।

আর এ সকল চাহিদা পূরণের জন্য অবশ্যই আপনাকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খেতে হবে এবং পাশাপাশি আয়রন ট্যাবলেট খাওয়াই অভ্যস্ত হতে হয়। গর্ভবতী মা ও শিশু উভয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তার পাশাপাশি গর্বে শিশু ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ হলুদ মেশানো দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত

তবে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস পর থেকে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এবং এমন অবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একই সময়ে একসাথে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ আপনি যদি একসাথে ক্যালসিয়াম আয়রন ওষুধ খান তাহলে এর কার্যকরী উপকারিতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

সাধারণত গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও তার গর্ভে থাকা শিশুর রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য আয়রন ট্যাবলেট খেতে হয়। সাধারণত নবজাতকের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তৈরিতে সহায়তা করে। এছাড়াও গর্ভ অবস্থায় যদি আপনার শরীরে ঘাঁটি দেখা দেয় তাহলে কষ্টকাঠিন্যর নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে যার কারণে পরবর্তীতে আপনার গর্ভপাত এর ঝুঁকি থাকে।

আপনি যদি গর্ভবতী থাকার সময় নিয়মিত আইরন ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের রক্তের কণিকা বৃদ্ধি পাবে যার কারণে আপনার নবজাতকের অক্সিজেন পেতে সমস্যা হয় না। তাছাড়া গর্ভবতী অবস্থায় আপনার শরীলে আগুনের ঘাটতি থাকলে নবজাতকের এর সুষ্ঠু বিকাশ হয় না সাথে সাথে ওজন কম হয় এবং অপরিচিতভাবে জন্মে থাকে।

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা অনেক যার কারণে আপনি গর্ভবতী হওয়ার পরের তিন মাস থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত আইন ট্যাবলেট খেতে হবে এবং আপনার ডেলিভারি না হওয়া পর্যন্ত একই নিয়মে আয়রন ট্যাবলেট খেতে থাকবেন। এতে করে আপনার শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিবে না পাশাপাশি নবজাতকের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করবে।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা গর্ভবতী থাকাকালীন বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কারণ মেনে চলতে হয়। এমন অবস্থায় শরীরে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সহজে চিকিৎসকেরা চিকিৎসা দিতে পারে না। সে কারণে এমন অবস্থায় প্রত্যেকটি মেয়েকে সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়।

চলুন জেনে নেই ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-

  • আমরা সাধারণত জানি ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁতের গঠন মজবুত করতে সহায়তা করে সেই সাথে সাথে গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম আমাদের গর্ভে থাকা শিশুর হার ও দাঁতের গঠনকে মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • এছাড়া গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। কারণ গর্ভবতী অবস্থায় গর্ভে থাকা শিশু মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে যার ফলে মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া থেকে বিরত থাকে। এতে করে শিশু সুষ্ঠ বিকাশ ঘটে না।
  • আপনি গর্ভবতী অবস্থায় নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে আপনার শিশু স্নায়ু ও পেশীর কার্যকারিতা রক্ষা পায়।
  • এছাড়াও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট আপনার শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে সহযোগিতা করে। সেজন্য অবশ্যই গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে আপনি নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন। কারণ এ অবস্থায় আপনি নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে আপনার ডেলিভারির সময় রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
  • আপনি যদি গর্ভবতী সময়ে নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খান সেক্ষেত্রে আপনার উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনা খুব সহজ হবে।
আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া খুবই জরুরী। সেজন্য অবশ্যই আপনি গর্ভবতী হওয়ার তিন মাস পর থেকে ডেলিভারির পর্যন্ত নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাবেন না

সাধারণত প্রতিটি মেয়ের গর্ভবতী অবস্থায় কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে চলাফেরা করতে হয়। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। পাশাপাশি এই সময় যে সকল ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন সেগুলো হল।

গর্ভাবস্থায়-কি-কি-ফল-খাবেন-না

আপনি গর্ভবতী অবস্থায় সাধারণত কাঁচা অথবা পাকা পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সেই সাথে সাথে আনারস, আঙ্গুর ফল খাবেন না। আবার এমন হয় বাসাতে অনেকদিন যাবত কিছু ফল ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা থাকে। এ সকল ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কেননা এমন অবস্থায় এ সকল ফল খেলে আপনার শারীরিক সমস্যা ঝুঁকি থাকে।
আমরা যদি প্রতিটি মেয়ে গর্ভবতী থাকলে এ অবস্থায় কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলি তাহলে আমরা খুব সহজে সুস্থ স্বাভাবিক একটি শিশু জন্ম দিতে পারি এবং নিজের স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে পারবো। সেজন্য প্রতিটি গল্প প্রতি মেয়েদেরকে তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। সেই সাথে অন্য গল্পটি মেয়েদেরকে তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও শিশুর বিকাশ গঠন সম্পর্কে বলতে হবে।

গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল খাবেন

আমরা সাধারণত গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে সব কিছু খেতে পারি না। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খেতে ইচ্ছে করলেও খাওয়ার পর বমি হয়ে যায়। সেজন্য আমাদেরকে গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। পাশাপাশি কি কি ফল খেলে আমরা প্রকৃত পরিমান পুষ্টি পেতে পারে সে সম্পর্কে আমাদেরকে জানতে হবে এবং সে সকল ফল খেতে অভ্যস্ত হতে হবে।

আপনি যদি গর্ভবতী থাকেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি ভিটামিন সি যুক্ত ফল প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। ভিটামিন সি যুক্ত ফল বলতে যেমন-লেবু, জাম্বুরা, কমলা মালটা, জলপাই, কামরাঙ্গা ইত্যাদি খেতে পারেন। এ সকল ফল খেলে আপনি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন।

এর পাশাপাশি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ, আপেল, ও কলা খেতে পারেন কারণ এগুলোতে যেমন ভিটামিন সি আছে তার পাশাপাশি এগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমান আয়রন রয়েছে। এর পাশাপাশি আপনি ইচ্ছে করলে আমলকি নামক একটি ফল আছে যেটি খেলে আপনার মুখে ৭ বাড়বে পাশাপাশি আয়রন ও ভিটামিন সি এর চাহিদা পূর্ণ হবে।

গর্ভাবস্থায় মেয়েদের করনীয়

আমরা সাধারণত প্রতিটি মেয়েই জানি এ সময় এমন একটি বিশেষ মুহূর্ত যায় যে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কারণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হয়। বিশেষ করে আমরা যারা গ্রামে বাস করি তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নিয়ম-কানুন থাকে। তাছাড়া এমন অবস্থায় প্রতিটি মেয়ে একটু সাবধানতা অবলম্বন করে। তারা এবং শিশুর সুস্থতা বজায় রাখার জন্য।

চলুন গর্ভাবস্থায় মেয়েদের করণীয় সম্পর্কে-
  • গর্ভবতী থাকা অবস্থায় অবশ্যই আপনি খাবার খাওয়ার আগে আপনার হাত পরিষ্কার করে কোন সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিবেন।
  • গর্ভবতী থাকা অবস্থায় অবশ্যই ভারী জিনিসপত্র চারা থেকে বিরত থাকবেন।
  • এমন অবস্থায় অবশ্যই অবশ্যই আপনি মাংস অথবা যেকোনো সবজি খাওয়ার ক্ষেত্রে আদা সিদ্ধ খাবেন না সেগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ করে খাবেন।
  • যে কোন ফল খাওয়ার আগে পরিষ্কার পানির মাধ্যমে ধুয়ে তারপরে খাবেন।
  • এ সময় অতিরিক্ত ক্ষুদা লাগে তাই দিনে চার থেকে পাঁচ বার করে খাবেন। 
  • আই সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার প্রথম তিন মাস আমরা ঝুকির মধ্যে থাকি। তাই এমন অবস্থায় আপনি কোথাও ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
  • মাসে অন্তত দুই থেকে তিনবার ডক্টরের কাছে চিকিৎসার জন্য যাবেন এবং নিয়মিত চেকআপ করবেন।
  • গর্ভ অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে অবশ্যই আপনি খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় শুয়ে পড়বেন না। খাবার খাওয়ার পর দশ মিনিট হাটাহাটি করবেন।
  • আপনি যখন গর্ভবতী থাকবেন সে সময় অবশ্যই আপনাকে দুঘন্টা অন্তত বিশ্রাম নিতে হবে এবং কমপক্ষে রাত্রে নিয়মিত দু'ঘণ্টা থেকে চার ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
  • গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে অবশ্যই আপনি টেনশন থেকে দূরে থাকবেন। কারন এই সময় অতিরিক্ত টেনশন করলে নবজাতকের ওপর প্রভাব সৃষ্টি হয়।

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম না খেলে কি হয়

সাধারণত আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পড়লে শরীর দুর্বলতা অনুভব হয়। পাশাপাশি কোন কাজ করতে ভালো লাগেনা। তেমন গর্ভাবস্থায় থাকা সময়ে ক্যালসিয়াম না খেলে গর্ভবতী মা এবং নবজাতক এর ঝুঁকি থাকে। সেজন্য অবশ্যই আমাদের সকলকে গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত খোলামেলা জানতে হবে।

আপনি যদি গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ না করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যয় আপনার জীবন সুখের মধ্যে থাকবে। সেই সাথে আপনার নবজাতকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে আপনি এবং আপনার শিশু উভয়েই ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বেন।

যার কারণে আপনার শরীরে কাঁপুনি, রক্ত শূন্যতা, নবজাতকের বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা; শিশু জন্মের পর ওজন কম হওয়া ও শিশু শরীরে খনিজের পরিমাণ কম থাকার কারণে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। এক কথায় এমন অবস্থায় আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে আপনি এবং আপনার শিশু ও ভয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।


এমনকি আপনার মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে জন্য ডাক্তারেরা তিন মাস পর থেকে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ওষুধ খাওয়ার জন্য গর্ভবতী মায়েদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমনকি স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক গুলোতে বিনামূল্যে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ওষুধ প্রদান করা হয়। যার কারণে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি না থাকে।

আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে খাওয়া যাবে কি

আমরা সকলে জানি গর্ভবতী থাকাকালীন এ প্রত্যেক মেয়েকে আইরন ও ক্যালসিয়াম ওষুধ নিয়মিত খেতে হয়। যাতে করে তাদের ডেলিভারির সময় ক্যালসিয়াম আয়রনের ঘাটতি না পরে। তার পাশাপাশি অবশ্যই গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য বলা হয়ে থাকে। সেইসাথে অবশ্যই আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে খাওয়া যাবে কিনা আপনাকে জানতে হবে।

আয়রন-ও-ক্যালসিয়াম-ট্যাবলেট-একসাথে-খাওয়া

সাধারণত চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে না খাওয়া। কারণ  আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে খেলে আপনার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত আমরা সকলেই জানি আয়রন ট্যাবলেট খালি পেটে খেতে হয়। এবং আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ১ ঘন্টা পর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া হয়।

কিন্তু যদি আপনি মনে করেন আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট একসাথে খাবেন তাহলে খাওয়া যাবে না। কারণ আয়রন ও ক্যালসিয়াম পৃথকভাবে আপনার পুষ্টি চাহিদা পূর্ণ করে থাকে। সে কারণে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সেবন করতে হবে।

আয়রন ট্যাবলেট খেলে ঘুম কম হয়

সাধারণত আপনি যদি নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট খাওয়াই অভ্যস্ত হয়ে পড়েন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ঘুম কম হবে বেশি নয়। কেননা যখন মানুষের শরীরে আয়নের ঘাটতি কম থাকে তখন মানুষ অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়ে যার কারণে অতিরিক্ত ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত আয়োজন ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন।

সে ক্ষেত্রে আপনাদের শরীরে প্রজ্জত পরিমান আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়ে রক্তস্বল্পতা ও লৌহ স্বল্পতাহীন উভয়ের সাথে জড়িত হয়ে থাকে এবং শিশু প্রাপ্তবয়স্ক সহ সকলের মধ্যে এই স্বল্পতা দেখা যায়। এমন অবস্থায় আপনার চোখে তুলনামূলকভাবে কম ঘুম হয়। তাই বলা হয়ে থাকে যে আপনি নিয়মিত আইডেন্ট ট্যাবলেট খেলে কম ঘুম হয়।

শিশুদের ক্ষেত্রে যদি আপনি ভুলবশত আয়রন ট্যাবলেট গ্রহণ করিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার শিশুর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অবশ্যই যারা আয়রন ট্যাবলেট খাবেন অবশ্য চিকিৎসকের সাথে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা সাপেক্ষে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করবেন।

আয়রনের প্রধান উৎস

সাধারণত আপনি ইচ্ছে করলে আয়রনের চাহিদা আরুনের ট্যাবলেট ছাড়াও এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে পূরণ করতে পারেন। একজন গর্ভবতী মহিলার নিম্নলিখিত খাবার গুলোর মাধ্যমে তার শরীরে প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। অবশেষে জন্য আপনাকে এগুলো নিয়মিত খেতে হবে।

চলুন তাহলে জেনে নিয়ে আয়নের প্রধান উৎস গুলোর নাম সম্পর্কে-
  • আয়রনের চাহিদা পূর্ণ করার জন্য আপনি নিয়মিত এক কাপ সিদ্ধ সিমের বিজি খেতে পারেন। এতে ৫.২ মিলিগ্রাম আইরন রয়েছে।
  • এছাড়াও আপনি এক কাপ সেদ্ধ মটরশুটি খেতে পারেন। যার মধ্যে ৪.৮ মিলিগ্রাম আয়রন পাবেন।
  • মিষ্টি কুমড়া সিমের বিচি এক কাপ ভেজে নির্মিত খাবেন। এতে করে আপনি ৪.২ মিলি গ্রাম আয়রন এর ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন।
  • 1 থেকে 1/2 কাপ পালং শাক সিদ্ধ করে প্রতিদিন খাওয়া অভ্যস্ত হন। তাতে করে আপনি ৩.২ মিলিগ্রাম আয়রন পেতে পারেন।
  • এক কাপ ৪৫ সিরিয়াল করে নিয়মিত খান তাহলে ২৪ মিলিগ্রাম আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন।
আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য আয়রনযুক্ত খাবারের তালিকা তৈরি করতে পারবেন। এ খাবারগুলো প্রধানত আপনি আয়রন ট্যাবলেট না খেলেও যদি নিয়মিত করে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে পরিমাণ ঘাটতিপূর্ণ হবে। সেজন্য অবশ্যই আমাদেরকে গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কত মাস থেকে ক্যালসিয়াম খাওয়া প্রয়োজন

সাধারণত গর্ভাবস্থায় থাকা কালীন সময়ে প্রথম তিন মাস পরে খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন ফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার সব সময় সংযুক্ত করে রাখতে হয়। কেননা এতে করে
নবজাতকের বিকাশ ও বৃদ্ধি সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যার কারণে এ সকল খাবার খেলে খুব দূরত্ব সহ কারে নবজাতকের বৃদ্ধ ঘটে।

এছাড়াও যদি আপনার বাচ্চার এমন অবস্থায় কোন ও ত্রুটি থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে এ ধরনের খাবার খেলে তা সম্পূর্ণভাবে দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার কারণে গর্ভবতী প্রথম তিন মাসের তালিকায় সব সময় ফলিক অ্যাসিড, জিংক, প্রোটিনসম্মত খাবার নিয়মিত খেতে হয়। তবে যদি আপনার শরীরে রক্ত পরিমান আয়রন ও কলসিয়াম থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে আলাদা বিষয়।

এমন অবস্থায় অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করতে হবে। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে সাধারণত শরীরের উন্নতি হয়। অনেক সময় গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন সময়ে অনেক মানুষের শরীরে যদি ক্যালসিয়াম ঘাটতি পড়ে সে ক্ষেত্রে অবশ্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে লেখকের শেষ মন্তব্য

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি গর্ভাবস্থায় কিভাবে ক্যালসিয়াম ও আয়রন ট্যাবলেট খাবেন এবং এগুলো খেলে কি ধরনের উপকার পাওয়া যায়। পাশাপাশি আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর উপকারিতা ও আয়রনের উঠছে নামসম উল্লেখ করেছি। আশা করি আপনারা খুব সহজে গর্ভাবস্থায় আই ডোন্ট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।

আমার নিজের বোন গর্ভবতী থাকা কালীন সময়ে আয়রন ট্যাবলেট ঠিকমতো খেতে পারত না। যার কারণে তার নরমাল ডেলিভারি হলেও গর্ভ পাত হয়ে থাকে। এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয় মা ও শিশু উভয় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই। পরবর্তী তার শরীরে পাঁচ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়।

সেজন্য আমি বলব গর্ভবতী থাকা কালীন সময়ে অবশ্য প্রতিটি মেয়েকে  গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সচেতন হয়ে নিয়মিত এগুলো খাওয়ার অভ্যস্ত করতে হবে। যদি আপনি আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে না পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনি যে খাবার বা ফলে আয়রন ও ক্যালসিয়াম পর্যান্ত পরিমাণ রয়েছে সেগুলো খাবেন।

সেগুলো নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন। মানুষ মাত্রই ভুল, আমি যদি পুরো আর্টিকেলটি লিখতে গিয়ে কোন রকম ভুল শব্দ বাবুল বানান করে থাকি সে ক্ষেত্রে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আর্টিকেলটি ভরে যদি আপনাদের ভালো লাগে বা উপকৃত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এ ধরনের পোস্ট পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url