রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থান আছে। রাজশাহী শহর মূলত পদ্মা নদীর পাশেই অবস্থিত। আর পদ্মা নদীর পাশ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার ঘিরে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের বিনোদন কেন্দ্র।
আজকে আপনারা আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে রাজশাহী বিখ্যাত কয়েকটি স্থানসমূহের নাম ও অবকাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। রাজশাহী কলেজের পাশ দিয়ে বয়ে চলে পদ্মা নদী।
পেজসূচী পত্রঃ রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান সমূহ
- রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান সমূহ
- দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী কলেজ
- সিএন্ডবি মোড়ের সবুজ ছায়া রাস্তা রাজশাহী
- লালন শাহ মুক্ত মঞ্চ রাজশাহী
- রাতের কয়েকটি আলোক সজ্জিত রোড রাজশাহীর
- টি-বাঁধ ও আই-বাঁধ রাজশাহী
- রাজশাহী চিড়িয়াখানা সম্পর্কে
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্যারিস রোড
- রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
- রাজশাহী জিয়া শিশু পার্ক
- লেখক এর শেষ কথাঃ রাজশাহীর দর্শনীয় স্থানসমূহ
রাজশাহীর দর্শনীয় স্থানসমূহ
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এবং ভ্রমণ স্থানগুলোর মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাফিনা পার্ক ও রিসোর্ট রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলাধীন গ্রাম খেজুর তলায় প্রায় ৪০ বিঘা জায়গার ওপর ২০১২ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে সাফিনা পার্ক ও শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা বরেন্দ গবেষণা জাদুঘর, বাঘা মসজিদ ,পুটিয়া রাজবাড়ী ,পর্দা গার্ডেন, শহীদ কামরুজ্জামান পার্ক, জিয়া শিশু পার্ক ইত্যাদি বেশ উল্লেখযোগ্য। রাজশাহীতে রাজশাহী কলেজ কলেজের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পদ্মা নদী। এবং এই পদ্মা নদীর পাশে পদ্মা গার্ডেন একটি উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র।
যেখানে রয়েছে বেশ কিছু মনোরম স্থান বিভিন্ন ধরনের রেস্তোরা সহ ভিন্ন ভিন্ন সব অব কাঠামো। এছাড়াও রয়েছে পাশ দিয়ে কিছু পশুপাখির খাচা যেগুলো মানুষের মন কেড়ে নিয়েছে। প্রতিনিয়ত মানুষের ভিড় বেড়ে চলেছে এই পদ্মা গার্ডেনে। বর্তমানে রাজশাহীতে এখন বিখ্যাত ও এই পদ্মা গার্ডেন।
আরও পড়ুনঃ ঘানিভাঙ্গা সরিষার তেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
এছাড়া রাজশাহীতে রয়েছে আরো বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য স্থান তার মধ্যে লালন শাহ মুক্তমঞ্চ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, টি-বাধ ও আই বাধ, সবুজ সিএনবি রাস্তা ,প্যারিস রোড রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাতের কয়েকটি আলোকসজ্জিত রোড, দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী কলেজ, চিড়িয়াখানা, ওয়াটার পার্ক প্রভুতি।
দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী কলেজ
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে রাজশাহী কলেজ 1873 সালে স্থাপিত এ কলেজটি এখন সারা বাংলাদেশে খ্যাটি লাভ করেছে। প্রশাসন ভবনের গাড়ল লাল দালানটির অন্যান্য সুন্দর্যের প্রতীক। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি। এই কলেজের সকল সৃষ্টি আপনাকে করবে মহিত।
রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের রাজশাহী শহরে অবস্থিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঢাকা কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজের পরে আছে রাজশাহী কলেজ। বাংলাদেশের তৃতীয় প্রাচীনতম কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ৬৮৫ কলেজের ২০১৫ সালের তথ্যের ভিত্তিতে রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের সেরা কলেজ।
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের উচ্চতর শিক্ষার প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান গুলির অন্যতম। দুবলাহাটির রাজা রায় বাহাদুর হরলাল রায়ের আর্থিক সহায়তাই রাজশাহী শহরে ১৮৭৩ সালে রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজশাহী কলেজের একটি নির্দিষ্ট লোগো আছে। যার মালিক রাজশহী কলেজ।
আরো বিস্তারিত রাজশাহী কলেজের প্রতীকে রয়েছে চারটি বৃত্ত। ভিতর থেকে বাইরে বৃত্তগুলো যথাক্রমে সত্য, সুন্দর, পবিত্রতা ও বিশ্বজনীনতার প্রতীক একটি উন্মুক্ত গ্রন্থ জ্ঞানের প্রতিক। একটি ফিতার বন্ধন বন্ধুত্ব ও পরম সহিংসুতার প্রতীক। একটি প্রদীপ শিখা আলোকিত মানুষের প্রতীক।
সিএন্ডবি মোড়ের সবুজ ছায়া রাস্তা
সবুজ ছায়া রাস্তা সম্পর্কে প্রায় সকলেরই কমবেশি জানা। রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে সি. এন্ড. বি. রাস্তাটি একটি উল্লেখযোগ্য। আপনি যদি কখনো এই রাস্তায় আসতে চান তাহলে এদিকে আপনারা চাইলে লক্ষীপুর মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে যে রাস্তাটা গেছে সেটি ধরে এগুলোই সিএনবি মোর পৌঁছে যাবেন।
রাজশাহী সবচাইতে সুন্দর শ্যামল রাস্তা গুলোর মধ্যে সিএনবি অন্যতম খুব সকালে এ রাস্তায় হাঁটলে আপনি অনুভব করতে পারবেন 198 মায়া সন্ধ্যার জাঁকজ এনবি তো রয়েছে সে সাথে রয়েছে এখানকার গরম গরম রসগোল্লা। সিএন বি মোরে আপনি রানার মিষ্টি খেলে মুগ্ধ হয়ে যাবেন। সন্ধ্যাবেলা সিএনবি মোরে এক অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনেক ছেলে মেয়ে আসে এ সময়। বিভিন্ন ধরনের মাছ ও আপনি পেয়ে যাবেন সন্ধ্যাবেলা সিএনজি মোরে। এছাড়াও এক বিখ্যাত চা মাটির পাত্রে আপনি খেতে পারেন যার সুস্বাদু আপনাকে মুগ্ধ করবে।সিএনবির পাশেই রয়েছে শিল্পকলা একাডেমী ও শিশু একাডেমি। সব মিলিয়ে এক সৌন্দর্যের অধিকারের সজ্জিত হয়েছে সিএনবি মোর।
এর গাছগুলো এমনভাবে আপনাকে ছায়া দিবে মনে হবে কেউ যেন তাদেরকে সুন্দর্য করে সাজিয়ে রেখেছে। এছাড়াও প্রতিটি গাছের নকশা কাটিং সবকিছুই যেন এক রকম ভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। নিরিবিরি গাড়ি ঘোড়ার কোন জ্যাম নাই একদম নিরিবিরি পরিবেশে আপনাকে মুগ্ধ করবে সিএনবি মোর।
লালন শাহ মুক্ত মঞ্চ রাজশাহী
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে আরেকটি স্থান হচ্ছে লালন শাহ মুক্তমঞ্চ যা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত।আরেকটি উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র যা ২০১৩ সালে স্থাপিত হয়েছে এখানে রয়েছে মুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সুবিধা তাছাড়া প্রকৃতির মুক্ত হাওয়া খেতে লোকজনের সমাগম লেগেই থাকে এখানে।
মুক্তমঞ্চের পাশাপাশি রয়েছে হাই মাদ্রাসা, ও কমিউনিটি সেন্টার। যার ফলে যে কোন অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রাম করা সুবিধা জনক। মুক্তমঞ্চে বিভিন্ন ধরনের ছোট খাটো মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। জায়গাটি অনেক সুন্দরের অধিকারী। বিকেল হলেই ছোট বড় সকলেই ভিড় জমায় এই মুক্তমঞ্চে।
আরও পড়ুনঃ কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গান বাজনা সবকিছু মিলে জমিয়ে তুলে বিকেল বেলা। তার পাশাপাশি রয়েছে ছোটখাটো নানা ধরনের ব্যবসায়ী। যেমন -বাদাম বিক্রেতা, সিঙ্গারা, পুরি, ভাজা, নুডুলস, চটপটি ইত্যাদি। তারপর পাশাপাশি রয়েছে কাগজ দিয়ে তৈরি ফুল, বেলুন, বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক চুল বাধা ব্যান্ড ইত্যাদি।
রাতের কয়েকটি আলোক সজ্জিত রোড রাজশাহীর
রাজশাহী রাতের আঁধারে প্রতিটি রাস্তা দেখলে আপনার মন জুড়িয়ে যাবে। আরো বেশি বিমোহিত হতে থাকবেন রাত্রে আলোকসজ্জিত রাস্তা গুলো দেখে। অন্যতম হিসেবে রয়েছে তালাইমারি থেকে আলো কোটি তেরোখাদিয়া এছাড়াও প্লেন চত্বরে রাস্তা। রাতে এই রাস্তাগুলাতে রিকশা যুগে কিংবা হেটে পথ চলতে শুরু করলে আলোর ঝলকানিতে আর পথ রাতে ইচ্ছা করবে না।
এছাড়াও তালায় মারিতে ওভারব্রিজ নামে বার রাস্তার মাথায় একটি রাস্তা তৈরি হয়েছে তার সৌন্দর্য প্রতিটি মানুষকে মুক্ত করেছে। দুই সাইডে যানবাহন চলাচল করে এবং মাঝামাঝিতে সবুজের গাছগাছালি দেখলে সুন্দর যে আরো পরিপূর্ণ রয়েছে। দুই পাশে চলাচলের জন্য রাস্তা সেই রাস্তাগুলো সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ করে রাখা হয়েছে।
রাস্তার মাঝামাঝিতে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের কাজ পাতা বাহার গাছ তার মাঝে মাঝে দেওয়া হয়েছে নানা রকমের কালারের লাইট। লাইটের ডিজাইন দেয়া হয়েছে প্রজাপতি যা সৌন্দর্য ধরিয়ে তুলেছি। রাজশাহী রাস্তাগুলোতে বৃষ্টি হলে হাঁটতে সেই মজা লাগে মনে হয় একটি পরিবেশ নেই কোন পোলাপ।
টি-বাঁধ ও আই-বাঁধ রাজশাহী
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ গুলোর মধ্যে শান্ত ও সিদ্ধ কিংবা অপরূপ কোথাও যেতে হলে আপনাকে আগে ঘুরে আসতে হবে এই দুই বাদে। এই দুই বাদে ঘুরে এলে আপনি বুঝতে পারবেন রাচি সৌন্দর্য কতটা পরিপূর্ণ এখানে পর্দার শীতল হাওয়া নিমেষে আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে এবং সবকিছু গুলিয়ে দিতে সহায়তা করবে।
বর্তমানে রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে হাইটেক পার্ক মানে আয়বার আয়বাদের স্থানটিকে এখন বর্তমানে হাইটেক পার্ক নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটিও নানা রকম ডিজাইন ও আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। যা রাতের বেলা অতুলনীয় সৌন্দর্যের অধিকারী। আর এই দুই বাদের পাশাপাশি রয়েছে।
আপনার মনে হবে কেউ যেন নিজের হাতে তৈরি করে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেখেছে গাছগুলোকে। বর্তমানে আইবাঁধ ও টি-বাঁধের রাস্তাগুলো খুব সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। বসে থাকলে মনে হবে গোধূলি লগ্নে রক্তিম সূর্য নদীর জলকে দেয় এক নতুন রূপ। স্থানীয় ও দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে এটি বহুল পরিচিত এবং বেশ জনপ্রিয় বটে।
বাঁধটি গড়ে ওঠার পর থেকে এর প্রকৃতি ও সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে। T-এর মত হওয়ার কারণে এটার নাম টি-বাধ দেওয়া হয়েছে। পদ্মার শান্ত সিদ্ধ ও শীতল হাওয়া নিমিষেই পর্যটকদের এক মনোমুগ্ধকর অনুভূতি উপহার দেয়। নদীর ওপারে রয়েছে একটি ছোট্ট গ্রাম। যেখানে নৌকায় করে ঘুরতে যান অনেকেই।
বাঁধের উপরে দাড়িয়ে থাকা বটবৃক্ষ ও শিমুল গাছের ছায়ায় কার না মন জুড়ায়। প্রবেশ করতে না করতে মাঝিদের হাঁকডাকে পর্যটকদের নিজের নৌকায় ভড়ানোর প্রতিযোগিতা সবাইকে এক ধরনের দ্বিধায় ফেলে দেয়। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থীর পদচারনায় মুখর হয় এই বাঁধ দুটো। কেউ পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও সঙ্গী নিয়ে ঘুরতে আসেন। কখনো উপভোগ করেন পদ্মার ভয়াল রূপ আবার কখনো পদ্মার শান্ত স্নিগ্ধ মমতাময়ী রূপ।
আরও পড়ুনঃ ১৪৩২ সালের বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫
রাজশাহী চিড়িয়াখানা সম্পর্কে
চিড়িয়াখানা শহীদ এ, এইচ, এম. কামরুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা রাজশাহী মহানগরবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। এটি রাজশাহী শহরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র এবং শিশু পার্ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পদ্মার তীর ঘেঁষা এক সময়ে রিস্কোস ময়দানের ৩২.৭৬ একর জায়গা জুড়ে আছে।
কেন্দ্রীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হয়েছে। উন্নয়ন ও সংস্কারের পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে রাজশাহীর শহীদ এ,এইচ, এম.কামরুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। কিন্তু চিড়িয়াখানায় আগে যে পশুপাখি ছিল বর্তমান নেই।
রাজশাহী মানুষ ছাড়াও প্রতিদিন শিক্ষা সফরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর এখানে আগমন ঘটে। শীতকালে বনভোজনের দল আসে প্রচুর বনভোজন স্পট এর জন্য নির্ধারিতকৃত হয়। সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ মূল্য নির্ধারিত। কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার জনবল 47 জন, মাসিক গড় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয় এবং প্রায় তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয়।
যাবার জন্য সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে আনুমানিক তিন কিলোমিটার দূরুত্বে রাজপাড়া এলাকায় পর্যটন মডেলের পশ্চিমে এবং রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, পুলিশ লাইন এর পূর্ব দিকে অবস্থিত। প্রধান রাস্তার উত্তর পাশের রাস্তা থেকে পার্ক দেখা যায়।
জিরো পয়েন্ট থেকে রিক্সা বা অটোতে যাওয়া যায়। ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা আমাদের দেশে ঘোড়া দরবারের কোষ খেলার প্রচলন করে। খেলা দেখা ও বাজি ধরার প্রয়োজন প্রচন্ড উত্তেজনা সৃষ্টি হতো। সচারচার ঘোড়া দৌড় মাঠ পারিস ছিল। খেলার নেশায় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন অনেকে এ খেলায় সর্বস্বান্ত হয়েছে।
খেলার জন্য আয়োজকরা লাভবান হয়েছে। রাজশাহী শহরের রেস করছিল পদ্মার পাড়ে। এখন এই রিস্কোস ময়দান আছে কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার এক পুরনো তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়।পরে এখানে টমটম বা ঘোড়া গাড়ি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল পরে উদ্যানে পরিণত হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্যারিস রোড
প্রাচীর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড সম্পর্কে জানেনা এমন খুব কম সংখ্যক আছে মানুষ। রাজশাহী এসে প্যারিস রোড ঘুরে যান নি এমন মানুষ খুব কমই আছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা গুলোর একটি এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড। এর চারিদিকের অপরূপ লাবণ্যতা আপনাকে এনে দিবে অন্যরকম শান্তি।
রাস্তার দুই পাশে শাড়ি বদ্ধ ভাবে রয়েছে গাছ। গাছগুলো যেন রাস্তাটিকে পরম আদরে মুড়িয়ে রেখেছে। দুপাশের গাছগুলো একে অপরকে আলিঙ্গন করতে মরিয়া।। সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো আজকে পড়েছে রাস্তার উপর। যেন আলোছায়া খেলায় প্রতিমা হয়ে জেগে উঠেছে রাস্তাটি। বলেছিলাম আপনাদেরকে যাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।
প্যারিস রোড নামটা শুনে হয়তো আপনারা কল্পনায় ভাবছেন এটা ফ্রান্সের কোন এক রাস্তা। কিন্তু না ফ্রান্সের নয়। পিস ঢালা পরিষ্কার রাস্তা এর বাঁ দিকে তিন ফুট চওড়া। একটি ফুটপাত আর এক দিকে গোলাপ বাগান দুই ধারে আকাশ ফুড়ে উঠেছে গগন সিরিজ গাছগুলো। যেন পরম আদরে মুড়িয়ে রেখেছে রাস্তাটিকে।
গাছের ডালপালা ছুঁয়ে রাস্তার বুকে আঁচড়িয়ে পড়ছে। সূর্যের আলো প্রতিমা হয়ে জেগে উঠেছে রাস্তাটি পূর্ব থেকে পশ্চিম নাক বরাবর প্রসারিত। এই রাস্তাটির নাম প্যারিস রোড। প্যারিস রোড রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক। বিশ্ববিদ্যালয়টির কাজলা থেকে শেরে বাংলা আবাসিক হল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার প্রলম্বিত রাস্তা।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিসে সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম
দূরত্ব থেকে খুব বেশি না হল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাক্ষী এই প্যারিস রোড। ভালবাসা -বন্ধুত্ব, জীবন- মৃত্যু, হাসি -কান্না একাকীত্ব নিঃসঙ্গতায় যুগের পর যুগ ধরে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার সাক্ষী এই রাস্তা।বিকেলের মিষ্টি রোদে সঙ্গে হালকা হিমেল হাওয়া গাছে পাখি ডাকছে আর প্যারিস রোড ধরে হেঁটে চলেছেন তরুণ- তরুণীরা। ১৯৮০ এর রোড নামের চলচ্চিত্র সঙ্গে রাস্তাটির মিল থাকায় এর নাম হয় প্যারিস রোড।
রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী শহরে স্থাপিত বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এটি প্রত্ত সংগ্রহের সমৃদ্ধ। সংগ্রহশালাটি ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এটি পরিচালনা করে থাকে। রাচি ও নাটোরের রাজারা তাদের ব্যক্তিগত সংগ্রহ বরেন্দ্র জাদুঘরে দান করেন।
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাদুঘর। এটি বরেন্দ্র শার্ট সোসাইটির একটি বড় অর্জন এবং তার সহযোগী অক্ষয় কুমার মৈত্রের রমাপ্রসাদ চন্দ্র এর অবদান। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে তারা বাংলার ঐতিহ্য ও নির্দেশন সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি গঠন করেন।
ঐ বছরে তারা রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান চালিয়ে ৩২ টি পুষ্প্রাপপ্য নিদর্শন সংগ্রহ করে। এই নির্দেশন গুলো সংরক্ষণ করার জন্য শরৎকুমার রায়ের দান করা জমিতে জাদুঘরটির নিজস্ব ভ্রমণ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণ শেষ হয় ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে। একই বছরের ১৩ নভেম্বর বাংলার তৎকালীন গর্ভনর কারমাইকেল জাদুঘরটি উদ্ভাবন করেন।
১৯১১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা জাদুঘর আকস্মাতে সংরক্ষিত সকল নিদর্শন দাবি করে বসে। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের পরে জাদুঘরটির অতিস্ত নিয়ে সংকট দেখা দেয়। ১৯৪৯ থেকে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জাদুঘর ভবনটির অর্ধাংশ মেডিকেল স্কুল হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের জাদুঘরটি বন্ধ হবার উপক্রম হলে ঐ বছরের ১০ই অক্টোবর তারিখে এর স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিগ্রহণ করে।
রাজশাহী জিয়া শিশু পার্ক
রাজশাহী জিয়া শিশু পার্ক রাজশাহী জেলা সদরের নওদাপাড়া বড় গ্রামে অবস্থিত। এই জিয়া শিশু পার্ক টি রাজশাহী শহরের একটি অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। নয়ন ভীরাম পিকনিক স্পট সব বয়সীদের জন্য দেশি-বিদেশি রাইট এবং নৌকা ভবনের সুব্যবস্থা ২০০৬ সালে নির্মিত এই পার্টিকে শহরবাসীর কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
এই শিশু পার্ক শহীদ জিয়া শিশু পার্ক নামে অধিক পরিচিত। ১২.২১ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত শহীদ জিয়া শিশু পার্কে আছে মেরি গো রাউন্ড, মিনি রেলগাড়ি, ফ্রম রাইট স্কাই, বাইক বাম্পার ,কার বাম্পার, বোর্ড টিডি, রাইটস ,থ্রিডি মুভি থিয়েটার, পেডেল বোর্ড, টি-কাপ ,ব্যাটারি কার ,হানি সুইং ইত্যাদি।
এছাড়া ১০ বছরের ছোট বাচ্চাদের জন্য রয়েছে ফ্রিজিক্যাল গেমস পুরুষ ও মহিলার জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ওয়াশরুম এবং কার্স পাকিং এর সুব্যবস্থা রয়েছে। শহীদ যা শিশু পার্কে প্রবেশ টিকিটের মূল্য 25 টাকা এবং পার্টি সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
রাজশাহী সদর বাস টার্মিনাল থেকে রিকশা বাস সিএনজি ভাড়া করে সহজে শহীদদের শিশু পার্কে যেতে পারবেন। বনভোজন করার জন্য আলাদা আলাদা স্পোর্ট ভাগ করে রাখা আছে। খুব সহজে পানি সংগ্রহ এবং ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আরাম আয়েশে আপনি দিনটা কাটাতে পারেন। অপূর্ব সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ শহীদ জিয়া শিশু পার্ক।
লেখক এর শেষ কথাঃ রাজশাহীর দর্শনীয় স্থানসমূহ
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আর্টিকেলটিতে বোঝানো হয়েছে। পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর রাজশাহী আম ও রেশমি বস্ত্রের জন্য বিখ্যাত রাজশাহী জেলা রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বড় শহর। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সমৃদ্ধ এর রাজশাহী শহরে রয়েছে বিখ্যাত মসজিদ মন্দির ও ঐতিহাসিক ব্যবস্থাপনা।
পদ্মা তীরের এই শহরের পর্যটকদের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থানের মধ্যে রয়েছে বাধা মসজিদ ,পুটিয়া রাজবাড়ী, পদ্মার পাড় ,বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শিশু পার্ক, হাওয়াখানা, পদ্মা গার্ডেন, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড, সিএনবি মোর, রাজশাহী শহরের সবুজ সজ্জিত সাজানো রাস্তা।
আশা করি আপনারা রাজশাহীর বিখ্যাত জায়গাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে। আপনারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং তাদের কেউ জানার জন্য সহযোগিতা করুন। আজ আর নয় আবার দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে। নিয়মিত এইরকম পোস্ট পেতে ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url