মুদ্রাস্ফীতি কি? মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ
মুদ্রাস্ফীতি কি? মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ সম্পর্কে আমরা
অনেকেই জানিনা। সেজন্য আপনারা যদি মুদ্রাস্ফীতি কি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও
নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
সে সাথে জানতে পারবেন মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব এবং কি কারনে ঘটে। মুদ্রাস্ফীতির কারণ
ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ বিস্তারিত ধারণা নিতে ও সঠিক দক্ষতা অর্জনের জন্য
আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়তে থাকুন।
পেজ সূচীপত্রঃ মুদ্রাস্ফীতি কি? মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ
- মুদ্রাস্ফীতি এর সংজ্ঞা
- মুদ্রাস্ফীতি কি কারনে ঘটে
- মুদ্রাস্ফীতি এর প্রভাব মানব জীবনে
- মুদ্রাস্ফীতি কারণ সমূহ
- বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির কারণ
- বাংলাদেশে মুদ্রা স্ফীতির জন্য যা যা করছে
- সফল না হওয়ার কারণ
- মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করার পদ্ধতি
- মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায়
- শেষ কথাঃ মুদ্রাস্ফীতি কি? মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ
মুদ্রাস্ফীতি এর সংজ্ঞা
মুদ্রাস্ফীতি এর সংজ্ঞা বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। সাধারণত দেশে
যখন মুদ্রার চাহিদার তুলনায় পূর্ণ সামগ্রী এর দাম তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি ঘটে তখন
মুদ্রাস্ফীতি হয়ে থাকে। অর্থনীতিবিদের ভাষায় মুদ্রাস্ফীতি হল এমন একটি
পরিস্থিতি যখন সাধারণত অর্থের মূল্য হ্রাস পায় এবং কোন সামগ্রিক দ্রব্যমূল্য
বৃদ্ধি পায়।
অনেকেই সংক্ষিপ্ত ভাবে অর্থের প্রচলনকে মুদ্রাস্ফীতি সংজ্ঞা হিসাবে চিহ্নিত
করেছেন। এছাড়াও আরো বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ সংজ্ঞা দিয়েছেন যখন দ্রব্য সামগ্রী
তুলনায় কার্যকর চাহিদার অধিক হারে বৃদ্ধি পায় তখন সে অবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি
বলে। তবে আপনি সহজ ভাষায় বলতে পারেন আমাদের যখন আয়ের পরিমাণ অপেক্ষা আর্থিক আয়
বৃদ্ধি পায় তখন সে অবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি বলে।
তবে উপরোক্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী বোঝা যায় যে মুদ্রাস্ফীতি এমন একটি পরিস্থিতি যখন
সাধারণত পণ্য ও সেবার দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পায় অন্যদিকে অর্থের মূল্য কমতে থাকে
এইরকম পরিপন্থী অবস্থাকেই সাধারণত আমরা মুদ্রাস্ফীতি বলে থাকি। সবচাইতে সহজ
ভাষায় আমরা বলতে পারি কোন সামগ্রীর ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি পাওয়াকে মুদ্রাস্ফীতি
বলে।
মুদ্রাস্ফীতি কি কারনে ঘটে
মুদ্রাস্ফীতি সাধারণত এর প্রধান কারণ হয়ে থাকে মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায়।
তাছাড়াও মুদ্রাস্ফীতি হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এজন্য মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও
নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। যেগুলো সাধারণত মানুষ এবং প্রাকৃতির কারণে
ঘটে থাকে। তখন সাধারণত সকল পণ্যের দাম করা থাকে।তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক।
পণ্য ও সেবা সরবরাহঃ সচরাচর বাজারে যদি দেখেন পণ্য সেবার চাহিদা দিন
দিন বেড়ে যায় কিন্তু সে অনুযায়ী সরবরাহ থাকে না। যার কারণে তখন পণ্যের দাম
বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে আমরা যে সকল পূর্ণ সামগ্রী কিনে থাকি সেগুলো তৈরি করার
সামগ্রীর দাম পারলেও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমাদের দেশে দিন দিন যে হারে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে সাধারণত সে অনুযায়ী পণ্য ও
সেবার চাহিদা তুলনামূলকভাবে আমাদের দৈনন্দিক জীবনে প্রভাব সৃষ্টি করে। অন্যদিকে
জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেলের ওপর আমরা নির্ভরশীল হয়ে
পড়ি। অন্যদিকে এ তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
আমরা বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসে পণ্য অর্ডার করে থাকি। সেগুলো আমাদের কাছে
পৌঁছানোর জন্য পেট্রোল বা তেলের প্রয়োজন হয়। ফলে এই দামের বৃদ্ধির সাথে চাহিদার
মান বাড়তে থাকে। দিকে এপেলের দাম পণ্যের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধঃ আমাদের জেনে থাকা ভালো যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও
যুদ্ধের সময়ে পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ সাধারণত বন্ধ হয়ে যায় বা নানা ধরনের
সমস্যার কারণে লেনদেনে ব্যাঘাত ঘটে। আর অন্যদিকে দামও বৃদ্ধি পায়। আমাদের দেশে
যদি বর্তমানে এখন যুদ্ধ লাগে সে ক্ষেত্রে এ অনেক অর্থের বিনিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন
পড়বে। এতে করেও মুদ্রার স্বাভাবিক সরবরাহ বেড়ে যায়।
উন্নয়নমূলক কাজঃ আমাদের দেশের সাধারণত বিভিন্ন ধরনের বন্যা ও প্রাকৃতিক
দুর্যোগে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থ ব্যয় করা
হয়ে থাকে। সেই সাথে যদি আমরা সাধারণত পণ্যের যোগান বৃদ্ধি না করি তাহলে মুদ্রা
ইস্পিতির দেখা দিবে।
সুদঃ আমাদের দেশে ব্যাংক গুলোতে একেক জায়গায় একেক ধরনের সুদের হার দিয়ে
থাকে তুলনামূলকভাবে যদি সকল ব্যাংকগুলো তাদের সুদের হার কমে দেয় সে ক্ষেত্রে
মানুষ ঋণের জন্য আবেদন করা শুরু করবে। এমন অবস্থায় যদি ব্যাংকের মুদ্রা সরবরাহ
না থাকে সেক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
মজুরিঃ সাধারণত যেকোনো চাকরি বা জমিতে কাজ করার ক্ষেত্রে দিন দিন মজুরি
হ্রাস বৃদ্ধি করা হয়। যদি বেতন বা মজুরের বৃদ্ধি ঘটে থাকে সে ক্ষেত্রে মুদ্রায়
স্ত্রীতে হবে। কারণ ধরুন আপনি এখন বেতন পাচ্ছেন 10000 টাকা যদি আপনার বেতন
তিন মাস পরে বিশ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে আপনার হাতে টাকার পরিমান
বেড়ে যাচ্ছে বিধায় পন্য কেনার চাহিদা বেড়ে যাবে।
রাজস্ব নীতিঃ যে কোন দেশের সরকার তার দেশের উন্নতির করার জন্য দেশের
বাইরে বিভিন্ন খাত থেকে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে থাকেন। এমন অবস্থায় সরকার যদি সে টাকা
বাজারে নিয়ে এসে ইনভেস্ট করে কিন্তু পণ্যের দাম আগের মতই থাকে তাহলে মুদ্রায়
স্পিতির হবে।
মুদ্রা ছাপানোঃ কোন দেশের সরকার যদি তার দেশের বিভিন্ন সমস্যার কারণে অধিক
পরিমাণে মুদ্রা ছাপাতে শুরু করে তাহলে সে দেশের জিনিসপত্রের যোগান বাড়াতে হবে
কিন্তু যদি না বেড়ে সমপরিমাণ থাকে সেক্ষেত্রে মুদ্রা ইসপিতি দেখা দেয়।
মুদ্রাস্ফীতি এর প্রভাব মানব জীবনে
মুদ্রাস্ফীতি প্রভাবে সাধারণ ভাবে আমাদের সমাজে যারা নিম্ন সেন্ট বসবাস করেন
তাদের জন্য ক্ষতিকর হয় এবং অন্যদিকে আরেক শ্রেণীর মানুষের জন্য বেশ লাভবান হয়ে
থাকে। যদি আপনার আয় বৃদ্ধি না পাই সে ক্ষেত্রে আপনার জীবন যাত্রার মান অবনতির
দিকে অগ্রসর হবে। যদি আপনার আয় পাঁচ টাকা হয় সেক্ষেত্রে আপনি সাধারণত পণ্য
ক্রয় করা থেকে বিরত থাকবেন।
অন্যদিকে যারা ব্যবসা করে তারা পণ্যের দাম কড়া দামে উঠিয়ে দিবেন। সে ক্ষেত্রে
তারা অনেক লাভবান হয়ে থাকবেন। আপনি জন্যে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে থাকেন। আর
সেই প্রতিষ্ঠানে সাধারণত বছরের শেষে বেতন বৃদ্ধি ঘটে না। এমন অবস্থায় আপনাকে
সংসার চালানোর জন্য টানাপড়ায় পড়তে হয়।
অন্যদিকে পন্য ও সেবা গ্রহণ করার মত ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। আর যদি আপনার বছর শেষে
ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বৃদ্ধি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার চাহিদার বাড়ার সাথে
সাথে পণ্য কেনার চাহিদাও বাড়বে। তবে সাধারণত যারা ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাদের
ক্ষেত্রে লাভ হওয়ার পরিমাণটাই বেশি থাকে।
এর কারণ হচ্ছে তারা যদি দেখে মুদ্রা স্মৃতির জন্য তাদের ব্যবসার ক্ষতি হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে সেক্ষেত্রে তারা মুনাফার পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলে ফলে তারা লাভবান
হয়। আবার আপনি যদি কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত
হবেন কিন্তু ব্যাংক লাভবান হবে।
মুদ্রাস্ফীতি কারণ সমূহ
সাধারণভাবে আমাদের জীবন যাপন করার জন্য অবশ্যই মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের
উপায় সমূহ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখতে হবে। নিত্যদিন বাজারে পণ্য সামগ্রীর মূল্য
হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে থাকে। যার কারণে মুদ্রা ইস্মিতির কারণ হয়ে থাকে। সাধারণত যদি
আপনার চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে
হয়।
আবার দেখা যাচ্ছে দিনদিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে চাহিদার পরিমাণ ফিরে চলেছে
কিন্তু সে হারে পণ্য ও সেবার যোগান হচ্ছে না এমন অবস্থায় মুদ্রা স্পিতি ঘটে। মনে
করুন আপনার পরিবারে দুইজন সদস্য আছে। এখন আপনি সাধারণত এক কেজি চাউলের ভাত রান্না
করে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে একমাস পরে আর একজন অতিথি আপনার পরিবারে সংযুক্ত
হচ্ছে।
সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চালের পরিমাণ বেড়ে দিতে হবে। কিন্তু অপরদিকে আপনার
চাল বৃদ্ধির পরিমাণ বাড়ছে না এমন অবস্থায় চালের দাম বৃদ্ধি পাবে। এমন অবস্থায়
মুদ্রা ইস্পিতি ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অন্যদিকে প্রচুর পরমনে অর্থ থাকে থাকে
কিন্তু আপনি সেই পরিমাণে উৎপাদন বৃদ্ধি করাতে পারছেন না এমন অবস্থাতেও
মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
দিন দিন আমাদের চাহিদা বেড়েই চলেছে কিন্তু সরবরাহের পরিমাণ একই অবস্থানে রয়ে
গেছে। যার ফলে পণ্য ও সেবার ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে।মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও
নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ থেকে বোঝা যায় যে চাহিদা দিক বা উভয়ের পরিবর্তনের
কারণে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির কারণ
বাংলাদেশের সাধারণত জনসংখ্যার বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি করা হয়
না। যার কারণে দিন দিন মানুষের চাহিদা বাড়ছে কিন্তু আয় বাড়ছে না। বাংলাদেশের
সাধারণত চারটি কারণে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে এটি উল্লেখ করেছেন বিশ্ব ব্যাংক।
বিশ্ব ব্যাংক আরো বলেছেন বাংলাদেশ রপ্তানির ক্ষেত্রে এখনো পিছিয়ে রয়েছে। এজন্য
মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ সম্পর্কে জানতে হবে।
এ চারটির মূল কারণ হচ্ছে উৎপাদন বৃদ্ধির পরিমাণ বেড়ে চলেছে কিন্তু বাইরের দেশে
রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সফলতা লাভ করতে পারে না। যার ফলে
মুদ্রাস্ফীতির ঘটছে। অপরদিকে অধিক পরিমাণে মুদ্রা সরবরাহ করা হচ্ছে কিন্তু পণ্য
সেবার বৃদ্ধি ঘটছে না। এতে করে মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে।
দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু কর্মস্থানের বৃদ্ধি করছে না যার কারণে
অনেক মানুষ এখনও কর্মসংস্থানের অভাবে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে
কিন্তু তার শিক্ষা অনুযায়ী কোন কর্মতে ধার হতে পারছে না। অন্যদিকে আমাদের ভিতরে
এখনো কর্ম নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে।
অপরদিকে কাজের মজুরি বৃদ্ধি করার ফলে অনেকেই পণ্য উৎপাদনে সফলতা লাভ করতে পারছেন
না। এমন অবস্থায় তারা দিন দিন কোন উৎপাদন করার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
যার ফলে বাইরে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। এমন
অবস্থায় মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে।
বাংলাদেশে মুদ্রা স্ফীতির জন্য যা যা করছে
বাংলাদেশের সাধারণত জনসংখ্যার পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। যার কারণে
মানুষ তাদের কর্মস্থান হারাচ্ছে। আবার যারা কর্মের সংযুক্ত রয়েছেন তাদের বেতন
বৃদ্ধিতে সরকার কাবুতিপনা করে চলেছে। যার ফলে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে
চলেছে।
আরও পড়ুনঃ কাঁকরোল খাওয়ার নিয়ম-উপকারিতা ও অপকারিতা
বাংলাদেশের সাধারণত বাজারগুলোতে টাকার সর্মারাহ হার কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের
নীতি সুধের হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কথাটির অর্থের বোঝানো হয়ে থাকে
যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যদি কোনভাবে ঋণ গ্রহণ করতে হয় সেক্ষেত্রে অধিক পরিমাণে
সুদ দিতে হবে। যেমন বিভিন্ন এনজিও ও সরকারি ব্যাংকগুলো সাধারণত বাংলাদেশের
ব্যাংকে থেকে ঋণ সরবরাহ করে থাকে।
এখন যদি তারা ঋণ গ্রহণ করে তাহলে তাদেরকে ডাবল হারে সুদ প্রদান করতে হবে। তাছাড়া
ডলারের দাম নির্ধারণ করার জন্য স্কুলিং প্লেগ এর নিয়ম ব্যবহার করার জন্য ঘোষণা
প্রদান করেছেন। যার কারণে ডলারের দাম অর্থনীতি বাজারের সাথে ওঠানামা করার
সম্ভাবনা রয়েছে। সে জন্য মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে জানতে
হবে।
পাশাপাশি এরিন খেলা পেয়ে আদায়ের জন্য কঠোর পরিমাণে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঘোষণা
প্রদান করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তুলনামূলকভাবে ৯ শতাংশ হারে সুদ নিয়ে থাকতেন
কিন্তু বর্তমানে সেটি ১২ শতাংশে পরিণত করেছেন। এছাড়াও যে সকল পণ্য সাধারণত আমরা
আমদানি করে থাকি সেগুলোর ওপর শুল প্রত্যাহার করেছেন।
এতে করে জনসাধারণের সমস্যা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে
যে সকল ব্রেকার যুব সমাজে অনেক শিক্ষিত মানুষ অবস্থান করছেন তারা সঠিকভাবে
কর্মস্থান যোগান করতে পারছে না। সরকার এত কিছু নিয়ম ধারার মধ্যে থেকেও মুদ্রা
ইসপিতি কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সফল না হওয়ার কারণ
সাধারণত বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি না কমার জন্য অর্থনীতিবিদেরা ধারণা করেছেন এর
প্রধান দুটি কারণ। এর মধ্যে কিছু বাজার সংযুক্ত রয়েছে এবং বাজারের বাইরে কিছু
রয়েছে। বাংলাদেশের ডলারের সংকটের প্রভাবে ট্রলারের বিপরীতে টাকার মান নির্ধারিত
স্থানে রাখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ থেকে সাধারণত যে পরিমাণ ডলার আয় করা হয় তারচেয়ে তো অধিক পরিমাণ ডলার
দেশ থেকে বাইরে প্রদান করা হয়ে থাকে। সাধারণত আমাদের মধ্যে এমন কিছু ব্যবসাবিদ
রয়েছে যারা অসাধু উপায়ে ডলার বাইরে প্রদান করে থাকে। যার ফলে এইরকম ঘটনা ঘটছে।
এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানো কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। তাই মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও
নিয়ন্ত্রণের উপায় জানা প্রয়োজন।
অপরদিকে উৎপাদন ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আকাশ পাতাল তফাৎ করছে। এর প্রধান কারণ
রয়েছে যারা উৎপাদন করছে তারা কিছু চাঁদাবাজির কারণে নির্ধারিত মূল্য পাচ্ছেন না।
যার কারণে তারা তুলনামূলকভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করছেন। আবার কিছু চাঁদাবাজ কারণে
তারা যখন পণ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছেন তুলনামূলকভাবে নিজের ইচ্ছামত দাম বৃদ্ধি করে
দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের এমন কিছু নীতি আছে যেগুলো জন সাধারণ সঠিক ভাবে পালন করি না আমরা।
কিন্তু অন্য সব দেশ সেগুলো সক্রিয়ভাবে পালন করার চেষ্টা করেন। যার ফলে বাংলাদেশ
এখনো অন্য সব দেশ থেকে মুদ্রাস্ফীতি থেকে পিছিয়ে আছে। আমরা একজোট হয়ে কাজ করলে
খুব সহজে মুদ্রাস্ফীতি করা সম্ভব হবে।
মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করার পদ্ধতি
মুদ্রাস্ফীতি সাধারণত দুইভাবে করা হয়ে থাকে। একটি হলো মূল্য সূচক নাম্বারস ও
অন্যটি মোট জাতীয় ডিফ্লেটর।নিম্নে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হলোঃ
মূল্যসূচক নাম্বারসঃ এক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি পরিমাপ করার জন্য আগের মূল্যের
সাথে বর্তমানের মূল্যের তুলনা করা হয়ে থাকে। এটি আবার দুই ভাগে বিভক্ত। একটি
ভোক্তাসূচক ও আরেকটি পাইকারি মূল্য সূচক।
ভোক্তা সূচকঃ আগে নিধারিত পণ্য যেমন খাদ্য, পরিবহন সেবা, স্বাস্থ্যসেবা
ইত্যাদির মূল্য নির্ধারিত গড়কে ভোক্তাসূচক বলে।
পাইকারি মূল্য সূচকঃ সাধারণত পণ্য ও সেবা খুচরাবাজারে আসার আগে পাইকারি
বাজারে আসে। যেখানে পণ্য বা সেবার একটি মূল্যস্তর থাকে। আর এই স্তরের সময়ের সাথে
সাথে পরিবর্তন পরিমাপ করার জন্য পাইকারি মূল্য সূচক ব্যবহৃদ করা হয়ে থাকে।
মোট জাতীয় পণ্য ডিফ্লেটরঃ কোনো নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য একটি দেশের
অধিবাসী দ্বারা দেশে বা বিদেশে উৎপাদিত সকল চূড়ান্ত পণ্য এবং সেবার মোট
ইনভেস্টকে মোট জাতীয় পণ্য ডিফ্লেটর বলে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায়
মুদ্রাস্ফীতি সাধারণত আমাদের আয়ের ওপর ত্বরান্বিত হয়ে থাকে। মুদ্রাস্ফীতির
কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় জানতে হবে। এর পাশাপাশি অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা
সৃষ্টি করে।যার কারণে মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে আমাদের
ভালোভাবে জানতে হবে। আর সরকারের এই ব্যবস্থাপনাকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
- আর্থিক নীতি
- রাজস্ব নীতি
- অন্যান্য
আর্থিক নীতিঃ মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হলো অর্থের পরিমাপ বৃদ্ধি করা। এখন
ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংক সৃষ্ট ঋণের সাহায্যে এ সকল লেনদেন করা হয়ে থাকে। যদি
আমরা এ ঋণের পরিমাণ কমাতে পারি তাহলে খুব সহজে মুদ্রা স্ফীতি কমাতে সক্ষম হবো।
মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি উপায়।
- সংরক্ষণের হার বৃদ্ধিকরণঃ বর্তমানে প্রচলিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দিতে হবে।এতে করে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অর্থ কমবে। অপর দিকে ঋণ প্রদানের হার কমবে এবং পাশাপাশি অর্থ হ্রাস পাবে এতে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে
- খোলাবাজারঃ খোলাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণপত্র বিক্রির মাধ্যমে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
- ব্যাংক হার বৃদ্ধিঃ সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে ব্যাংক হার বৃদ্ধি করে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজস্ব নীতিঃ সাধারণত মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতি অপেক্ষা
রাজস্ব নীতি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জনি যে মুদ্রা স্ফীতির অন্যতম কারণ
অতিরিক্ত ব্যয়।নিম্নের কয়েকটি নিয়ম উল্লেখ্য করা হলোঃ
- সরকারি ব্যায় হ্রাসঃ সরকারের বিভিন্ন খাতে ব্যায় কমিয়ে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে করতে হবে। আসমতা বাজেট গ্রহণ করে সরকারি ব্যয় কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
- অভ্যন্তরীণ ঋণঃ আমরা ্যদি দেশের স্বার্থে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করি। সেক্ষেত্রে আর্থিক আয় কমবে তাহলে সহজে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
- কর বৃদ্ধিঃ খুব সহজে কর বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবো।
অন্যান্য ব্যবস্থাঃ উপরে আলোচিত দুটো উপায় ছাড়া আরও কিছু নিয়ম অনুযায়ী
মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে।
- উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমরা খুব সহজে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
- এছাড়াও সরকার নির্ধারিত দাম মেনে ক্রয় বিক্রয় করতে পারি। কোন ধরনের চাঁদাবাজ ছাড়া ফলে মুদ্রা স্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
- মুজুরির হার বিভিন্ন সময়ের চাপে পড়ে অল্প সময়ে বেশি বাড়ানো হয়ে থাকে।এতে করে মুদ্রা স্ফীতি ঘটে।
- বেশে আমদানি বৃদ্ধি করতে হবে।
- অবৈধ পথ থেকে সরে আসতে হবে।
- নির্দিষ্ট ন্যায্যমূল্য তালিকা করতে হবে।
শেষ কথাঃ মুদ্রাস্ফীতি কি? মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সমূহ
মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে আমি আমার সাধ্য মতো ব্যাখ্যা
করার চেষ্টা করেছি। কেন মুদ্রা স্ফীতি হয় এবং কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
পাশাপাশি এর সংগা ও মানব জীবনে এর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা
করি আপনারা জানতে ও বুঝতে পেরেছেন মুদ্রাস্ফীতির কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়
সম্পর্কে।
আরও পড়ুনঃ ১৫টি অনলাইন ইনকাম সাইট বিকাশ পেমেন্ট
মানুষ মাত্রই ভুল পোস্টের মধ্যে কোন বানান বা ভাষা ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে
দেখবেন।আর পোস্টটি পড়ে উপকৃত হলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে পড়ার সুযোগ
করে দেন। এ ধরনের পোস্ট পেতে ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।
ধন্যবাদ।
ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url