ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
এই ব্লগটিতে আপনারা জানতে পারবেন ড্রাগন ফলের ১০ টি উপকারিতা, কি কি পুষ্টি উপাদান আছে, অপকারিতা, ড্রাগন ফলে এলার্জি আছে কিনা, ওজন কমে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে ব্লগটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
পেজ সূচীপত্রঃড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। ড্রাগন একটি রসালো পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি ফল। যেটা আমাদের দেহের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও খনিজ লবণ থাকে। আর এগুলো আমাদের দাঁত ও দেহের অনন্য ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলের মধ্যে প্রচুর আঁশ থাকে যা আমাদের রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
পাশাপাশি হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে ড্রাগন ফলে যে শুধু উপকারিতা আছে তা নয়। সব খাবারের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা উভয়ই আছে। অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আপনার হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পেশার কমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
আরও পড়ুনঃ ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম
বাচ্চাদের জন্য ও ড্রাগন ফল খুব উপকারি তবে মাত্রার বেশি খাওয়ানো যাবে না। আপনি যদি মনে করেন পুষ্টি উপাদান আছে বলেই খাওয়াবেন তাহলে ভুল। সব কিছু সম্পর্কে আপনারা জানতে হবে। তারপর সেটার ব্যবহার করতে হবে।ড্রাগন ফলে আপনার এলার্জি ও হতে পারে। আপনি ভালো জানবেন আপনার কোন খাবারে এলার্জি হয়।
ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ
ড্রাগন ফল প্রকারভেদ সাধারণত ৪ ধরনের। ড্রাগন ফলকে অনেকে পিটায়া নামে চিনে।ড্রাগন ফল আগের তুলনায় এখন আমাদের দেশের মানুষ বেশি চিনে কারণ এখন ড্রাগন ফল আমরা চাষ করতে পারে। ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি লোভনীয়। তবে আপনাকে অনেকেই ড্রাগন ফল খেতে পছন্দ নাও করতে পারেন।
ড্রাগন ফলের প্রধান প্রকার ও কালার গুলো উল্লেখ করা হলোঃ
- লাল ড্রাগন ফলঃ এটি সাধারণত উজ্জ্বল লাল রঙের হয়ে থাকে।ভিতরের পুরো অংশটায় লাল রঙের হয়ে থাকে। এতে লাইকোপেন নামে কিছু উপাদান আছে যা আপনার হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। এছাড়া এতে ভিটামিন- সি ও ফাইবার থাকে যা আমাদের দেহে ক্যান্সার ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- গোলাপি রঙের ড্রাগন ফলঃ গোলাপি রঙের ড্রাগন ফল খেতে একটু ট্যাঞ্জি ও মিষ্টি প্রকৃতি। এতেও ভিটামিন ও ফাইবার রয়েছে। যা আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- হলুদ বর্ণের ড্রাগন ফলঃ হলুদ রঙের ড্রাগন ফল খেতে খুব মিষ্টি ও হালকা টক প্রকৃতির। এটিতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ফাইবার থাকে। যা আমাদের ত্বক সুরক্ষা রাখতে সহায়তা করে।
- বেগুনি রঙের ড্রাগন ফলঃ এই ড্রাগন ফল খুব কম দেখতে পাওয়া যায়। তবে এটা খেতে আরও বেশি সুস্বাদু। বেগুনি রঙের ড্রাগন ফলে অ্যান্টঅক্সিডেন্ট থাকে। ফলে আমাদের শরীরের যাবতীয় খারাপ উপাদান গুলো দূর করে শরীরকে সুস্থতা দান করে।
- সাদা ড্রাগন ফলঃ সাদা ড্রাগন ফল সাধারণত অন্য সব ড্রাগন ফলের থেকে তুলনায় কম মিষ্টি হয়ে থাকে।এটি পানসা ধরনের হয়ে থাকে। এটিও হজমে বেশ উপকারি।
ড্রাগন ফলে পুষ্টির পরিমাণ
- প্রোটিন - ২ গ্রাম
- চর্বি - ০ গ্রাম
- ভিটামিন-এ - ১০০ আইইউ
- চিনি- ১৩ গ্রাম
- শর্করা - ২২ গ্রাম
- ভিটামিন সি - ৪ গ্রাম
- ক্যালরি - ১০০ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম - ৩২ গ্রাম
- তন্তু - ৪ গ্রাম
- আয়রন - ০.২ মিলিগ্রাম
কিভাবে আপনি ড্রাগন ফল খাবেন
ড্রাগন ফলে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা
ড্রাগন ফল খেলে পায়খানা লাল হওয়ার কারণ
ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- চুলের যত্নেঃ আপনি প্রতিদিন দুধের সাথে এক গ্লাস করে ড্রাগন ফল খেলে আপনার চুল নরম ও মসৃণ হবে।সে সাথে আপনার চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
- হজমে ড্রাগন ফলঃ হজমে ড্রাগন ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।ড্রাগন ফলে অলিগোস্যাকারাইড থাকে যেটা আমাদের অন্ত্রের খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে।
- ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতেঃ ড্রাগন ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্রি রাডিকেল থাকে। যা ক্যান্সারের মত মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ড্রাগন ফলের ভূমিকা অনেক। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে।
- রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করেঃ ড্রাগন ফলের মধ্যে ভিটামিন সি থাকে। আর এটি একটি শক্তিশালী পুষ্টি উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যেটা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অনেক চিকিৎসক প্রতি দিন ২০০ গ্রাম ড্রাগন ফল খাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন।
- হার্ট সুস্থ রাখতেঃ হার্ট সুস্থ রাখতে ড্রাগন ফল বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ড্রাগন ফলে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে যা আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সহায়তা করে এবং হার্ট কে সুস্থ রাখে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিঃ ড্রাগন ফলের মধ্যে অ্যান্টঅক্সিডেন থাকে যা আমাদের ত্বকের মরাকোষ গুলো দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাই এবং বয়সের ছাপ সহজে ত্বকে পড়ে না।
- হাড় মজবুত করতেঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হবে। কারণ ড্রাগন ফলে ক্যালসিয়াম আছে যা আমাদের দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।
- চোখের জন্য উপকারঃ ড্রাগন ফল সুস্বাদু খাবার এতে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ উপাদান আছে। যা খাওয়ার ফলে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ভূমিকাঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া খুব উপকারি। ড্রাগন ফল আপনার শরীর কে রোগ থেকে দূরে রাখে। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। ভালো চর্বি উৎপাদনে সহায়তা করে এবং ভ্রণের মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে।
ড্রাগন ফলের অপকারিতা
- অনেকের ক্ষেত্রে ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীর ফুলে যায়, বমি বমি ভাব হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- হজমের সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত যেকোনো খাবার খেলে শরীরে সমস্যা হতে পারে। সে রকম হজমেও সমস্যা হয়। পেট ফেপে, বমি হয়,শরীর দূর্বল হতে পারে।
- ড্রাগন ফল আপনার শরীরে হালকা ফাইবার এর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে উচ্চরক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ড্রাগন ফল উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খেলে শরীরে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- কিডনি সমসাজনিত ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে ড্রাগন ফল খাওয়া খুব ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url