জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার রক্ষাকবচ হিসেবে কিভাবে জামের বিচির গুড়া ভূমিকা রাখে, আরো জানতে পারবেন এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
পেজসূচী পত্রঃ জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
- জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জামের বিচি গুড়ার ভূমিকা
- জামের বিচির গুড়া পেট ভালো রাখে
- জামের বিচি গুড়া উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- জামের বিচি গুড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- জামের বিচি গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
- জামের বিচি গুড়া খাওয়ার অপকারিতা
- জামের বিচির গুনাগুন সম্পর্কে
- জামের বিচির পাউডার তৈরির নিয়ম
- জামের বিচির দাম সম্পর্কে
- লেখক এর মন্তব্যঃ জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম বিভিন্ন রকম হয়। আপনারা অনেকেই অবাক হতে পারেন
যে জামের বিচির গুড়া আবার কিভাবে খাওয়া যায়। কারণ এখনো জামের বিচি গুরা খাওয়া
সম্পর্কে অনেকের কাছে অজানা। জামের বিচি একটি উপকারী প্রাকৃতিক খাদ্য যা আমাদের
দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
আরও পড়ুনঃ সজনে পাতার মজাদার ৪টি রেসিপি
অনেক চিকিৎসকেরা ডায়াবেটিস রোগীদেরকে জামের বিচির গুড়া খাওয়া জন্য পরামর্শ
দেন। জামের বিজি গুড়া করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আগে জামের বিচি সংগ্রহ করে নিতে
হবে। এরপর বিচিগুলো পানিতে ভালোভাবে পরিষ্কার করে। তারপর জামের বিচি গুলো রোদ্রে
শুকিয়ে নিয়ে হালকা আগুনের আছে ভেজে নিতে হবে।
ভাজার পর ঠান্ডা করে নিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে পাটাই বা ব্লেন্ডারে
ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। গুড়াগুলো সংরক্ষণ করার জন্য কাছে বইম ব্যবহার করাই
উত্তম। কারণ প্লাস্টিকের বইয়ে রাখলে গন্ধ হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। আর কাজের
বইমে রাখলে অনেক দিন ধরে সংরক্ষণ করা যায় এতে করে কোন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
না।
এরপর প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে একগ্লাস পানিতে দুই চা চামচ জামের বিচি গুঁড়া
দিয়ে আপনি নিয়মিত খেতে পারেন। এছাড়া আপনি ইচ্ছা করলে সকাল সন্ধ্যা দুই বেলা
জামের বিচির গুঁড়া খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরে দুরারোগ্য দূর হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। আপনি ভালো ফলাফল পেতে নিয়মিত এভাবে
জামের বিচি গুড়া খেয়ে যান।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জামের বিচি গুড়ার ভূমিকা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জামের বিচির গোড়ার ভূমিকা অপরিসীম। অনেকে ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। কিন্তু কোন ভাবে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না। এমন অবস্থায় আপনাকে
আমি পরামর্শ দিব
ওষুধের পাশাপাশি আপনি জামের বিচির গুড়া খেতে পারেন।
জামের বিচির গোড়াতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে
ভূমিকা রাখে। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যে এই রোগ থেকে বিভিন্ন রোগকে ডেকে আনে এবং
এখন পর্যন্ত এই ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ আবিষ্কার করা যায়নি। আর আমাদের প্রতিটি
ঘরে কমবেশি ডায়াবেটিস রোগী আছেন বা এই রোগে নিয়মিত আক্রান্ত হচ্ছেন।
জামের বিচির গুড়াতে জাম্বোলিন ও জাম্বোসিন নামক উপাদান আছে। যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই উপাদান ইনসুলিন এর কাজ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত বারবার ঘন ঘন প্রসাব ও তৃষ্ণা লাগবে থাকে। জামের বিচির গুড়া সকল সমস্যা থেকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুনঃ নখের কুনি দূর করার ঘরোয়া উপায়
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জামের শাঁশের চেয়ে জামের বিচির গুড়া বেশ উপকারি। সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীদের ঘন ঘন প্রসাব ও পিপাসা লেগে থাকে এবং পাশাপাশি ইন্সুলিন এর প্রয়োজন হয়। আর এর সব কিছু গুণাগুন জামের বিচিতে বিদ্যমান। তাই চিকিৎসকেরা ডায়াবেটিস রোগীকে জামের বিচির গোড়া খাওয়ার পরামর্শ দেন।
জামের বিচির গুড়া পেট ভালো রাখে
জামের বিচি গুড়া পেট ভালো রাখতে সাহায্য করে। জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে এর গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। পেটের সমস্যা এখন আমাদের একটা সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে। বিভিন্ন কারণে পেট ব্যথা হয়ে থাকে। কখনো খাবারের সমস্যা হলে গ্যাস থেকে পেট ব্যথা করে।
আর গ্যাস ও বদ হজম এধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে আপনি জামের বিচি গুড়া খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালবেলা আপনি খালি পেটে এক গ্লাস পানির সাথে এক চা চামচ জামের বিচি গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।এবং ভালো ফলাফল পেতে কয়েকদিন খাবেন। দেখবেন কিছুটা হলেও আপনি এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন।
এছাড়াও আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের নিয়মিত পায়খানা হয় না। তারা ইচ্ছে করলে নিয়মিত জামের বিচি গুড়া খেতে পারেন। এতে করে আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যাঁরা মনে করি জামের বিচি গুড়া খেলে পায়খানা কষা হয়ে যায় এটা তাদের ভুল ধারণা বরং এটা খেলে পায়খানা ক্লিয়ার হয়।
জামের বিচি গুড়া উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
জামের বিচি গুড়া উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে যা আপনাদের অনেকের অজানা। আমার গ্রামের অনেক মানুষ এই উচ্চরক্তচাপ রোগে আক্রান্ত। আমাদের শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে তাহলে বিভিন্ন ধরনের রোগ শরীরে তৈরি হয়। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখা আমাদের প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ পিরিয়ডের সময় প্যাড ব্যবহারের নিয়ম
আপনি নিয়মিত জামের বিচি গুড়া খান তাহলে আপনাদের উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আপনার উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মধ্যে না থাকে তাহলে আপনি যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন। এমনকি আপনি মারা ও যেতে পারেন। আপনি এ ধরনের সম্মুখীন হওয়ার আগে সচেতন হোন। সেজন্য সর্বপ্রথম আপনাকে শরীর সুস্থ রাখতে হবে।
তাই আপনি নিয়মিত জামের বিচি গুড়া খেতে পারেন। সকালবেলা খালি পেটে এক চা চামচ জামের বিচি গুড়া এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন। জামের বিচি গুড়া উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনাকে সহায়তা করবে। আপনি নিয়মিত জামের বিচি গুড়া খেলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আপনার হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
জামের বিচি গুড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
জামের বিচি গুড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।আমি যদি শরীরে ঠিক মতো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না বাড়াতে পারি। তাহলে আমার শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধবে।তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখাটা আমাদের জন্য জরুরি। আমাদেরকে প্রতি দিন নানা ধরনের কাজ করা লাগে। যার কারণে আমাদের শরীরের শক্তি ক্ষয় হয়।
সেজন্য আমাদের শরীরে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম,আয়রন ও জিংক জাতীয় উপাদান প্রয়োজন। আর এর সবকিছু জামের বিচি গুড়া খেলে আপনি পাবেন। তাই আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য জামের বিচি গুড়া খেতে পারেন। সকালে বেলা খালি পেটে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার পেট পরিষ্কার হবে এবং অন্যদিকে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
আপনারা অনেকে জামের বিচি গুড়া খেতে পারেন না। তার কারণ জামের বিচি গুড়া খেতে তিতা জাতীয়,, তাই আপনারা জামের বিচি গুড়া মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। মধুও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। মধুতেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই জামের বিচি গুড়া ও মধু একসাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম এর পাশাপাশি জামের বিচি গুড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। জামের বিচি গুড়া একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন যার কারণে এতে হাজারো গুনাগুন উপাদান রয়েছে। সেই সাথে হাজারো উপকারিতা আছে।নিম্নে জামের বিচি গুড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
- শক্তি বৃদ্ধিতে জামের বিচি গুড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। জামের বিচি গুড়ায় প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকে। আপনি নিয়মিত জামের বিচি গুড়া খেলে আপনার দেহে আমিষের চাহিদা পূরণ হবে।অন্য দিকে শক্তি অক্ষুণ থাকবে।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও জামের বিচি গুড়া ভূমিকা রাখে। অনেক গবেষণায় জানা যায় জামের বিচি গুড়া মস্তিষ্ক এর ভেতরের শক্তি উন্নত রাখে ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে।
- ত্বক সুস্থ রাখতে জামের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য ভিটামিন সি এর প্রয়োজন যা জামের বিচিতে রয়েছে। জামের বিচি ব্যবহার করলে যেমন উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় সে সাথে ত্বকের তেলাক্ত ভাব দূর হয়।
-
ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে জামের বিচির ভূমিকা অত্যাধিক পরিমাণে রয়েছে। প্রচুর মানে
ভিটামিন ফাইবার ভিটামিন সি ও সমৃদ্ধ পুষ্টি উপাদান যার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি
ঝরাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। জামের বিচিতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে
ক্ষুধা লাগে কম যার কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুব একটা অসুবিধা হয় না।
-
হার্ট সুস্থ রাখার জন্যও জামের বিচির গুঁড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। জামের ভিত্তিতে
প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম রয়েছে আর পটাশিয়াম আমাদের হাটকে সুস্থ রাখতে
সহায়তা করে।
-
আর যারা ডায়াবেটিস রোগী আছে তাদের জন্য উপাদান। নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি
জামের বিচির গুঁড়া খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন এর কাজ করে জামের
বিচির গোড়া।
-
ডায়াবেটিস রোগীদের ঘন ঘন পেশাব ও পিপাসা লাগা জামের বিচির গুড়া খেলে দূর
হয়
-
শরীরের মধ্যে নানা ধরনের রোগকে প্রতিরোধ করার জন্য যে ক্ষমতা তৈরি করার
প্রয়োজন পড়ে তা জামির বিচির গোড়াতে রয়েছে। কথা জামের বিচির গোড়া খেলে
আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
-
, জামের বিচিতে এক ধরনের পলিফেনালস উপাদান রয়েছে যেটা আমাদের ক্যান্সার রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
-
জামের বিচির গুড়া খাওয়াতে পেট পরিষ্কার হয় বদহজম বমি বমি ভাব দূর হয়
-
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকার রয়েছে জামের বিচির গোড়া। আপনি নিয়মিত গ্রামের
বিচির গোড়া খেলে আপনার চুল মজবুত ও নতুন ভাবে চুল গজাতে সহায়তা করে।
-
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম জানার পাশাপাশি জেনে ফেলুন আমাদের হাড় মজবুত
করার জন্য ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসের মতো
বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানের প্রয়োজন হয়। যা আমরা জামের বিচির গুড়া থেকে
পেয়ে থাকি।
-
ডায়রিয়া বা আমাশা হলে পেট কামড়ায় সে ক্ষেত্রে সাধারণত কয়েকটা জামের বিচির
গুড়া করে এক গ্লাস পানির সাথে খেয়ে নিলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়।
ওয়েম্যাক্স আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url